মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা

আপনি কি মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা গুলো কি কি তা[ জানেন? এটা আমাদের দেশের পাহাড়ি অঞ্চলের প্রিয় ফল, যা রান্নায় ব্যবহার হয়। তবে এর স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বেশি। 
আপনি কি জানেন, এই স্বাদহীন দেখায় নানা রোগের যায়গায় বন্ধন করে রাখতে পারে আপনাকে? আসুন, আজকে বিস্তারিত জানি কেন মিষ্টি কুমড়া আমাদের সুস্থ জীবনধারার অপরিহার উপাদান।

মিষ্টি কুমড়ার স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ

মিষ্টি কুমড়া কম ক্যালোরি দিয়ে ভরপুর। এতে প্রচুর ভিটামিন A, ভিটামিন C এবং ভিটামিন E থাকে, যা হারিয়ে যাওয়া চোখের দৃষ্টি ফেরাতে সাহায্য করে। অনেক মিনারেল, যেমন ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামও এতে পাওয়া যায়। ফ্যাট আর কার্বোহাইড্রেট খুব কম থাকায় ওজন বাড়ানোর ঝুঁকি কমে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধতা- এই ফলের সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ হলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কারোটিনয়েড ও ভিটামিন A এর উৎস হিসেবে এটি দারুণ। এগুলো আমাদের শরীরের কোষে ক্ষতি লুকানো থেকে রক্ষা করে। ফলে, অনেক রোগের প্রতিরোধ হয় সহজে।

হৃদরোগে প্রতিরোধক: মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা

হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী উপাদান-
মিষ্টি কুমড়া থাকলে হার্টের জন্য চিন্তার কিছু নয়। এতে থাকা ফাইটোকেমিক্যাল কোলেস্টেরল কমানোর কাজে আসে। ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আনে। হার্টের অসুখের ঝুঁকি এইভাবে অনেক কমে যায়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক-
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায়, রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় থাকে। নিয়মিত খেলে, হাইপারটেনশনের ঝামেলা কমে যায়। অতি সূক্ষ্মভাবে একটা সুস্থ হার্টের জন্য এই ফল গুরুত্ব রাখে।

চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়

ভিটামিন এ এর গুরুত্ব-
চোখের জন্য ভিটামিন A এক দামী উপাদান। মিষ্টি কুমড়া এর চমৎকার উৎস। চোখে নানা সমস্যা যেমনঃ অন্ধকারে কম দেখার সমস্যা ও রেটিনা ক্ষতি প্রতিরোধে এর ভূমিকা অপরিসীম।

রেটিনা স্বাস্থ্য রক্ষা-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জন্য চোখের আলোর ক্ষতি কমে। চোখকে কান্তিময় রাখতে সাহায্য করে এই ফলের ভিটামিন। বেশি দেখার জন্য, নিয়মিত খেলে চোখের স্বাস্থ্যে উন্নতি হয়।

হজমে সহায়ক ও ওজন নিয়ন্ত্রণে

ফাইবারের উপকারিতা-
মিষ্টি কুমড়ার ফাইবার হজমে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সক্ষম। এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হজমের দুর্বলতা কমে, পেট সুস্থ থাকে।

ওজন কমাতে সহায়ক-
কম ক্যালোরির কারণে, ওজন কমাতে এই ফল চমৎকার। নিয়মিত খেলেও পেটি অনুভূতি বজায় থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণে অন্য কোনও ঝামেলা হয় না।

বা্ন্ধ্যপ্রান্ত ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়-
ভিটামিন C থাকায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ঠাণ্ডা-কাশি থেকে রেহাই পেতে এই ফল বেশ কার্যকর। শরীরের অ্যান্টিবডি বাড়াতে এর ভূমিকা দুর্দান্ত।

ইনফেকশন থেকে রক্ষা-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এতে এন্টিবয়োটিকের প্রয়োজনও কমে যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর

শর্করা ও গ্লুকোজের স্তর নিয়ন্ত্রণ-
কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায়, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত। এটি রক্তের সুগার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলেও গ্লুকোজের স্তর স্থিতিশীল থাকে।

ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করা-
নির্বাচিত খাবারের মধ্যে এটি অন্যতম। ডায়াবেটিস রোগীরাও এই ফল প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। শরীরের ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়ে।

চামড়ার স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য

ত্বকের আর্দ্রতা ও প্রাকৃতিক আলোকসজ্জা-
ভিটামিন E ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জন্য ত্বক সুস্থ থাকে। এটি ত্বকে জ্বালা ও বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। ত্বক কান্তিময় ও ঝলমলে দেখায়।

বলিরেখা ও বলিরেখার কমানো-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাধ্যমে, বার্ধক্যের প্রভাব কমে। ত্বক নমনীয় ও সতেজ থাকে। নিয়মিত ব্যবহার করলে, বয়সের ছাপ কমে যায়।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি ও স্ট্রেস কমানো

পুষ্টি উপাদানের মাধ্যমে শক্তি বৃদ্ধি-
মিষ্টি কুমড়া দিয়ে শক্তি বাড়ানো যায়। এতে থাকা ভিটামিন B ও মিনারেল ক্লান্তি কমায়। শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

মানসিক স্বাস্থ্য ও স্ট্রেসে সহায়ক-
এই ফল মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন B6 ও ম্যাগনেশিয়াম মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। ব্যায়াম বা পড়াশোনার আগে খেলে মনোযোগ বাড়ে।

প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে ব্যবহার ও রান্নার পরামর্শ

কিভাবে সঠিকভাবে মিষ্টি কুমড়া খাওয়া যায়-
দিয়ে খাওয়ার আগে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে। ভুনা, পোড়ানো বা ভাজা করে খাওয়া যায়। দই বা দুধের সাথে)। কিছু রেসিপি তৈরি করে দেখা তো মজাদার হয়।

বিভিন্ন রান্নার পদ্ধতি ও রেসিপি-
  • ভুজা কুমড়া ভুনা
  • কুমড়ার রেজালা
  • সাউসেজ সহ রান্না
  • কুমড়ার স্যুপ একটু লেবু বা লবণ দিয়ে খেলে আরও সুস্বাদু লাগে।
সতর্কতা ও সম্ভাব্য অ্যালার্জি বিষয়ক তথ্য-
সবজি ও ফলের মত, কিছু মানুষের অ্যালার্জি থাকতে পারে। খাওয়ার আগে অল্প করে খেয়ে দেখে নিন। যদি অ্যালার্জির সমস্যা হয়, দ্রুত ডাক্তার দেখান। এছাড়া বেশি খেলে বেশ কিছু পেটের সমস্যা হতে পারে।

লেখকের শেষ মন্তব্য- মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা

মিষ্টি কুমড়া শুধু দেখায় সাধারণ। কিন্তু এর ভিতর লুকানো অসংখ্য উপকারিতা। চোখের দৃষ্টি থেকে হার্টের সুস্থতা, ওজন নিয়ন্ত্রণ থেকে রোগ প্রতিরোধ- সবই এতে মিশে রয়েছে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এতে অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি আপনাকে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখতে পারে। যা স্বাস্থ্যের জন্য এক অমূল্য উপহার। মিষ্টি কুমড়ার অসাধারণ উপকারিতা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অঙ্গীকার।

সুতরাং, আজ থেকেই আপনার ডাইরি বা রান্নার তালিকায় যোগ করুন এই সুস্থতা অমূল্য খাবার। সুস্থ জীবনধারার জন্য এই স্বাদের ফলের গুরুত্ব বুঝুন। এখনই শুরু করুন, কারণ সুস্থ থাকাই সবচেয়ে বড় ধন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url