বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এই সম্পর্কে অনেকেই হয়তোবা জানেন না। এ বিষয়ে জানতে অনেকে অনেক জায়গাতে বিভিন্নভাবে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাই আজকে আপনাদের জানার সুবিধার্থে আমি আমার আর্টিকেলটিতে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। 
উক্ত বিষয়টি ছাড়াও আজকের আর্টিকেলটিতে বিকাশ এজেন্ট সম্পর্কিত আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয় বিকাশের ব্যবসা করার ১০টি উপায় বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল। আশা করি আজকের বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনাদের সকলের জন্য অত্যন্ত উপকারী হবে।

বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট হলো এমন এক ধরনের এজেন্ট অ্যাকাউন্ট যার মাধ্যমে সারাদেশে প্রায় তিন লাখ প্রেজেন্ট ৭ কোটির বেশি বিকাশ গ্রাহক কে ক্যাশ আউট, ক্যাশ পে, বিল, সেভিংস এর মত আর্থিক সেবা প্রদান করে থাকে। বিকাশের সাথে পার্টনার হিসেবে একজন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন এবং ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি লাভ করতে পারেন। 

আজকের আর্টিকেলটির এই পর্যায়ে আমরা জানবো বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়। আপনারা যারা বিকাশ এজেন্ট হতে চাচ্ছেন তাদেরকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হতে পারে চলুন তাহলে উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা শুরু যাক।
  1. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে হলে জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন বা ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট এগুলোর যেকোনো একটির ফটোকপি প্রয়োজন হতে পারে
  2. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে আপনার সত্যায়িত ছবি এবং সিম কার্ড প্রয়োজন পড়বে
  3. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে হলে বাড়তি কোন টাকা পরিষদের প্রয়োজন হয় না আপনি যদি কিছু শর্ত মেনে চলতে পারেন তাহলে সম্পূর্ণ ফ্রিতে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে পারবেন
  4. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে শুধু সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দিয়ে একটা সিম কিনতে হবে
  5. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে
  6. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য আপনার টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে
  7. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে আপনার নিজস্ব একটা দোকান থাকতে হবে
  8. বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে সবার প্রথমে একটি ফরম পূরণ করতে হবে তার নাম হলো বিকাশ এজেন্ট ফরম আপনি চাইলে অনলাইনে বা আপনার এলাকায় বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিস থেকেও বিকাশ এজেন্ট ফরমটি পূরণ করতে পারেন
  9. বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য অবশ্যই আবেদনকারীর তিন কপি ছবি প্রয়োজন হবে
  10. বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য ফোন নাম্বার বা মোবাইল নাম্বার দিতে হবে যে নাম্বারে এখন পর্যন্ত কোন বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়নি
আশা করি ইতিমধ্যে আপনারা বুঝতে পেরেছেন বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হতে পারে।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

আপনি কি একজন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে চাচ্ছেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার আগে কিছু বিষয় বা নিয়ম সম্পর্কে কিছু ধারণা রাখতে হবে। বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে যে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার নিয়ম কি কি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার নিয়ম সম্পর্কে জানা এবং ধারণা নেওয়ার পর পরই আপনি বিশ্বাস এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার উদ্যোগ নিতে পারবেন। 
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার নিয়ম না জানলে কখনোই আপনি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হতে পারবেন না। আজকের আমার আর্টিকেলটির মূল আলোচ্য বিষয় হলো বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক। আশা করি আজকের আর্টিকেলটির এই পর্বটি আপনাদের জন্য অনেকটাই উপকারী হতে চলেছে।
  • বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য আপনাকে আপনার এজেন্ট একাউন্ট থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা লেনদেন থাকতে হবে
  • বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য আপনাকে প্রতি মাসে অবশ্যই কমপক্ষে পাঁচটি করে পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট খুলে দিতে হবে
  • বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য অবশ্যই আপনার এজেন্ট একাউন্টে সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা রাখতে হবে এটি সম্পূর্ণ বাধ্যতামূলক
  • বিকাশ এজেন্ট হওয়ার পর প্রথমবার সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা আপনাকে লোড করতে হবে
  • বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আপনার নিজস্ব একটি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট থাকতে হবে

বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিকাশ। মোবাইল ব্যাংকিং এর কথা উঠলে প্রথমে মনে পড়ে বিকাশকে। অনেকেই এই প্রশ্নটি করে থাকেন যে বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা পাওয়া যায়। বিকাশ এজেন্ট হিসেবে এ বিষয়টি আমাদের জন্য জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। 
তাই আমি আমার আজকের আর্টিকেলটিতে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করি বিষয়টি আপনাদের জন্য কিছুটা উপকারী হবে। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক। বিকাশ কোম্পানি আপনাকে বিকাশ এজেন্ট হিসেবে দুই ধরনের উপায়ে বিকাশ এজেন্ট কমিশন প্রদান করবে সেগুলো হল।
  1. বিকাশের টাকা লেনদেন করবেন কোডের মাধ্যমে
  2. টাকা লেনদেন করবেন এজেন্ট অ্যাপ এর মাধ্যমে
প্রথমে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশে টাকা লেনদেন কোডের মাধ্যমে কত টাকা কমিশন পাওয়া যায়। বিকাশে টাকা লেনদেন করার জন্য একটি নির্দিষ্ট কোড থাকে। সেটা হল *247#। আপনি যদি উক্ত কোডের মাধ্যমে বিকাশে লেনদেন করে থাকেন তাহলে নিচের কমিশন গুলো আপনি পেতে পারবেন। চলুন কমিশন গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • আপনি বিকাশ কোম্পানির কাছ থেকে ১০০০ টাকার জন্য ৪.১০ টাকা কমিশন পাবেন তার মানে আপনি হাজারে ৪.১০ টাকা কমিশন পেতে পারবেন
  • সেই সূত্রে আপনি যদি বিকাশে ১০ হাজার টাকা লেনদেন করেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন ৪১ টাকা
  • আর যদি ১০০০০০ টাকা লেনদেন করেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন ৪১০ টাকা
  • আবার আপনি যদি বিকাশে ৫০০০০ টাকা লেনদেন করে থাকেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন ২০৫ টাকা
এবার আসুন অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশে টাকা লেনদেনের মাধ্যমে কমিশন পাওয়ার বিষয়টি আলোচনা করা যাক। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করলে কমিশন বেশি পাওয়া যায় এবং বিকাশ আপনাকে অতিরিক্ত কমিশনও প্রদান করে থাকে। কমিশন গুলো জেনে নেওয়া যাক।
  • আপনি যদি বিকাশে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন ৪.৩০ টাকা এবং অতিরিক্ত কমিশন সহ মোট কমিশন পাবেন ৪.৫০ টাকা এখানে অতিরিক্ত কমিশন হল ০.২০ টাকা
  • আবার ১০ হাজার টাকা লেনদেন করলে কমিশন পাওয়া যাবে ৪৩ টাকা
  • আর যদি আপনি এক লক্ষ টাকা লেনদেন করেন তাহলে কমিশন পাওয়া যাবে মোট ৪৫০ টাকা

বিকাশের ব্যবসা করার ৮টি উপায়

বিকাশের ব্যবসা করার ৮টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। নিচে ছকে বিস্তারিত আলোচনা করা হল:
পাওয়া যাবে মোট ৪৫০ টাকা বিকাশের ব্যবসা করার ৮টি উপায়
বিকাশের প্রতিটি লেনদেনের পরে সতর্কতা হিসেবে ব্যালেন্স চেক করুন
প্রতিদিন যে কোন কৌশল খাটিয়ে হোক বেশি লেনদেন করার চেষ্টা করুন
আপনার ব্যক্তিগত লেনদেন আপনার এজেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে করুন
আপনি যদি বিকাশ ব্যবসায় অতিরিক্ত লাভ করতে চান তবে অ্যাপসের মাধ্যমে লেনদেন করবেন
হাতে পর্যাপ্ত মূলধন রাখুন যেন বিকাশের ব্যবসা একবার শুরু হলে তা বজায় রাখতে পারেন
বিকাশের এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান সুন্দর ভাবে দাঁড় করান
ব্যবসায়িক এরিয়াতে, বিশেষ করে যেসব জায়গাগুলোতে মানুষের সমাগম সবসময় বেশি থাকে, সেসব জায়গাতে ব্যবসা চালু করুন
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার সফলতার অন্যতম মূল মন্ত্র হলো নিজের উপর বিশ্বাস শক্ত রাখা

বিকাশের ব্যবসার জন্য কোন কোন বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী

আমরা অনেকেই জানি না যে বিকাশের ব্যবসার জন্য কোন কোন বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী। তাই আমি আমার আজকের বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কি আর্টিকেলটিতে উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা যাক ।
বিকাশ ব্যবসায় সাবধানতা
বিভিন্ন প্রতারক চক্রের কৌশল থেকে সতর্ক থাকবেন
আপনার পিন নাম্বার সব সময় গোপন রাখবেন
আপনার একাউন্টের ব্যালেন্স কখনো কাউকে জানাবেন না
গ্রাহকদের নাম্বারও কাউকে দেখাবেন না
নাম্বার লেখার সময় অবশ্যই ভালো ভাবে চেক করবেন। অন্যথায় ভুল নাম্বারে চলে যাবে
প্রত্যেক লেনদেনের পরে আপনার ব্যালেন্স চেক করবেন
গ্রাহকদের কাছে থেকে সব সময় কাগজপত্র বুঝে নিবেন

লেখকের শেষ কথা-বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম

প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে বিকাশের ব্যবসা করার ১০টি উপায় বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি নিয়মিত বিকাশ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে এ বিষয়গুলো জেনে রাখতে হবে। বিকাশ সম্পর্কে আশা করি বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url