ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো জেনে নিন
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধু, ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো জানতে আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব যে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো।
তাহলে আসুন পাঠক বন্ধুরা আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে আমরা জেনে নেই ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য কেমন ল্যাপটপ দরকার:
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো তা জানার আগে আমরা জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য কি ধরনের ল্যাপটপ দরকার। সাধারণত মানুষ জিজ্ঞেস করে থাকেন যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য কি ধরনের ল্যাপটপ বা পিসির প্রয়োজন হয়।
আরো পড়ুন: কম দামে ভালো ল্যাপটপ ২০২৪ কোনটি জেনে নিন
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজগুলো বেশিরভাগই ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর মত। তাই একটা সাধারণ মানের ল্যাপটপ বা পিসি দিয়েই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজগুলো করা সম্ভব।
প্রসেসর এর ধরন- ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে কাজ করার জন্য আপনি কমপক্ষে Core i3 এর প্রসেসর ব্যবহার করতে পারেন। তবে এর চেয়ে বেশি হলে আরো ভালো হয়। আপনার দৈনন্দিন কাজগুলোর জন্য Core i3 যথেষ্ট হবে ।১১ জেনারেশনের ঊর্ধ্বে হলে স্পিডের পাশাপাশি অন্যান্য কাজ গুলো করতে ভালো হয়।
Ram কত হওয়া উচিত -ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য কমপক্ষে 8 GB ram এর লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়াও অন্যান্য কাজ যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন ইত্যাদি কাজ করতে গেলে 8 GB ram এর বেশি অর্থাৎ 16জিবি ram এর প্রয়োজন পড়তে পারে।
স্টোরেজ-সাধারণত দেখা যায় যে বেশিরভাগ ল্যাপটপ গুলোর মধ্যে স্টোরেজ হিসাবে বাই ডিফল্ট হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করা হয়। হার্ডডিস্ক এর পাশাপাশি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য অতিরিক্ত একটা SSD ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ল্যাপটপের স্পিড আরো অনেক বেড়ে যাবে। তাই অন্ততপক্ষে ২৫৬ জিবি এসএসডি ব্যবহার করলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজগুলো করা খুবই সহজ হবে।
ডিসপ্লে-গ্রাফিক্স এবং ডিজাইনের কাজ সহ অন্যান্য কাজ গুলো ভালোমতো দেখার জন্য এবং বোঝার জন্য একটি ফুল এইচডি ডিসপ্লে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরনের কাজ করার জন্য এবং ভালোমতো স্ক্রিনে শো করার জন্য ডিসপ্লে ১৫ ইঞ্চি বা তার বেশি হওয়া উচিত।
ব্যাটারির অবস্থা- ডিজিটাল মার্কেটিং এবং অন্যান্য কাজ করার জন্য ল্যাপটপের ব্যাটারি কমপক্ষে ৪ ঘন্টা ব্যাকআপ দিতে পারে এ ধরনের ভালো মানের ব্যাটারি প্রয়োজন হয়। অনেক সময় বাহিরে গিয়ে ল্যাপটপের কাজ করার প্রয়োজন পড়ে। সে ক্ষেত্রে চার্জার ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে। তাই ভালো মানের ব্যাটারির প্রয়োজন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য কয়েকটি ল্যাপটপ এবং তার মডেল নাম নিম্নে উল্লেখ করলাম-
- HP 15s- FQ5786TU Intel Core i3 1215U 15.6Inch FHD Display Laptop
- Lenovo IdeaPad 1 15ADA7 AMD Ryzen-3 3250U 15.6 inch FHD Display Laptop
- Dell Vostro 14 3400 11 Generation Intel Core i3 1115G4 14 inch HD Display gray Laptop
উল্লেখিত ল্যাপটপ গুলো ছাড়াও বাজারে আরো অনেক ল্যাপটপ আছে যা ডিজিটাল মার্কেটিং কাজ করার জন্য আপনি যাচাই-বাছাই করে যে কোন একটি মডেলের ল্যাপটপ আপনি কিনতে পারেন।
গ্রাফিক্সের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো:
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো তা জানার আগে আমরা জানার পাশাপাশি গ্রাফিক্সের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো হতে পারে তা আমরা জেনে নিব। অনেকেই জানতে চায় যে গ্রাফিক্সের জন্য কেমন ল্যাপটপ দরকার হবে। গ্রাফিক্সের কাজ অনেকেই শিখেছেন আবার অনেকেই ভালো ভিডিও তৈরি করার কাজ শিখেছেন ।
আপনি যদি ভালো গ্রাফিক্সের কাজ বা ভালো ভিডিও তৈরি করতে পারেন তবে সে ক্ষেত্রে আপনার ভালো কনফিগারেশনের ল্যাপটপ বা কম্পিউটার প্রয়োজন। গ্রাফিক্সের জন্য কিছু ল্যাপটপ এবং মডেলের নাম সহ নিম্নে উল্লেখ করলাম-
Lenovo Legion 5 15ACH6H 15.6 Inchi Display-lenovo ব্র্যান্ডের এই ল্যাপটপটিতে রয়েছে এ এম ডি রাইজেন 7 5800H এর প্রসেসর ৮ কোর ও ১৬ থ্রেড। এটিতে রয়েছে ১৬ জিবি Ram DDR4 3200 MHZ, ৫১২ জিবি এসএসডি , গ্রাফিক্স কার্ড ৬ জিবি NVIDIA GeForce RTX 3060 গ্রাফিক্স কার্ড থাকার কারণে ক্রেতাদের অনেক চাহিদা রয়েছে এই ল্যাপটপের উপর।
এই গ্রাফিক্স কার্ড এর মাধ্যমে গ্রাফিক্সের যে কোন ধরনের কাজ খুব সহজেই আপনি করতে পারবেন। এই ল্যাপটপটিতে আরো রয়েছে ১৫.৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে এবং ৭২০ ওয়েট এইচডি ও ৮০ ওয়াটের ব্যাটারি। সেই সাথে রয়েছে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি। এটির দাম একটু বেশি এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে।
আরো পড়ুন: 32 ইঞ্চি স্মার্ট টিভির দাম কত জানতে চোখ রাখুন
যদি আপনার বাজেট থাকে তাহলে আপনার পছন্দের তালিকায় এটি রাখতে পারেন এবং আপনি চাইলে এই ব্র্যান্ডের এই মডেলের ল্যাপটপটি আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন এর জন্য কিনতে পারেন।
আসুস (Asus)ROG-গ্রাফিক্সের কাজ করার জন্য আরেকটি ভালো মানের জনপ্রিয় ল্যাপটপ হচ্ছে আসুস ব্র্যান্ডের ROG সিরিজের G15 G513IM ল্যাপটপ।এই ল্যাপটপটিতে রয়েছে AMD Ryzen 7 4800H 8 Core ১৬ থ্রেড প্রসেসর। এটিতে আরো রয়েছে DDR 4 16 GB 3200 MHZ এর একটি Ram এবং এর পাশাপাশি এক্সট্রা রেম স্লট রয়েছে এই ল্যাপটপে।
সুতরাং গ্রাফিক্সের ভালোমতো কাজ করার জন্য আপনি চাইলে যাচাই-বাছাই করে এই ল্যাপটপটি আপনি কিনতে পারেন।
গ্রাফিক ডিজাইনের জন্য কমপক্ষে 4 জেনারেশন, 256 SSD, ৮ জিবি রেম, ২ জিবি গ্রাফিক্স কার্ড সম্বলিত ল্যাপটপের প্রয়োজন। তবে জেনারেশন ৪ এর উপরে এবং ৮ জিবির উপরে রেম হলে ভালো হয়। তবে মিনিমাম কাজের জন্য কোর আই থ্রি প্রসেসর,7জেনারেশন, ১২০ ডিবি এসএসডি হার্ডডিস্ক, ৫০০জিবি সাধারণ হার্ডডিস্ক, ৪ জিবি রেম, ১ জিবি গ্রাফিক্স কার্ড এবং ১৪ ইঞ্চি ডিসপ্লে সংবলিত ল্যাপটপ এর প্রয়োজন।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কেমন ল্যাপটপ প্রয়োজন:
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো সেটা জানার আগে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কি ধরনের ল্যাপটপ দরকার তা আমি আপনার সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করার জন্য আপনি শুরুর দিকে নিম্নমানের ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবেন।
কিন্তু আপনি যখন বড় বড় টুলস এবং সফটওয়্যার এর কাজ করতে যাবেন তখন আপনার সমস্যা হতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হবে যদি আপনি কোর আই ফাইভ, আপডেট জেনারেশনের একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার নিতে পারেন। যেটা দিয়ে আপনি ভালোভাবে ওয়েট ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করতে পারবেন।
ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এর ৮ জিবি হলে ভালো হয় এবং প্রসেসর মিনিমাম কোর আই থ্রি ৮ জেনারেশন হলে বেটার হবে। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য বেসিক প্রোগ্রামে এর কাজ করতে যেকোনো কনফিগারেশনের পিসি দিয়ে কাজ করা যায়। তবে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের জন্য ভালো স্টোরেজ থাকতে হবে এবং ভালো একটা প্রসেসর থাকতে হবে এবং ১২৮ জিবি SSD সঙ্গে যদি থাকে তাহলে ভালো হয়।
তবে অনেক বেশি বা হাই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ বা পিসি দরকার হয় না এবং ভারী গ্রাফিক্স কার্ড এর দরকার হয় না। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য একটি ভালো ল্যাপটপের বা কম্পিউটারের জন্য নিম্নে কনফিগারেশন গুলি উল্লেখ করলাম-
প্রসেসর-ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য একটি ফাস্ট প্রসেসর দরকার। যেমন- Intel Core i5 বা AMD Ryzen 5 ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য খুবই ভালো।
মেমোরি- 8 জিবি বা তার বেশি Ram ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যথেষ্ট ভালো।
এসএসডি-ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য একটি এসএস ডি ড্রাইভ হলে সবচেয়ে ভালো হয় কারণ এতে ব্রাউজার দিয়ে অনেক ফাস্ট কাজ করা যায় এবং দ্রুত লোড করানো যায়।
গ্রাফিক্স কার্ড-ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য খুব একটা গ্রাফিক্স কার্ড দরকার পড়ে না। তবে এটা নিলে গ্রাফিক্সের জন্য ভালো সাপোর্ট পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য একটি ভাল মন তোর কিবোর্ড মাউস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রসেসর -ইন্টেল Core i7
- Memory- 8GB DDR4 Ram
- জমা করার স্থান-240 GB SSD
- গ্রাফিক্স কার্ড- Intel UHD graphics 730
উল্লেখিত কনফিগারেশন টি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আপনার বাজেট এবং প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে আপনি বিভিন্ন কনফিগারেশনের ল্যাপটপ নিতে পারেন।
ওয়েব ডিজাইনের জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো:
এ পর্যায়ে ওয়েব ডিজাইনের জন্য কোন ল্যাপটপ বা কি ধরনের ল্যাপটপ ভালো তা আমরা জানার চেষ্টা করব এবং এর পরে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো সেটা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। ওয়েব ডিজাইনের জন্য সাধারণত একটা মোটামুটি ধরনের একটা ল্যাপটপ হলেই চলে।
আপনি যেকোনো ধরনের ল্যাপটপ দিয়ে ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতে পারবেন ওয়েব ডিজাইনের জন্য আলাদা কোন কনফিগারেশনের বিশেষ ল্যাপটপ দরকার পড়ে না। নিচে কিছু ধারণা দিলাম-
মনিটর- গ্রাফিক ডিজাইনের জন্য বা গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ করার জন্য একটু বড় ডিসপ্লের ল্যাপটপ হলে ভালো হয়। ১৪ ইঞ্চি ডিসপ্লে হলেই চলবে। তবে ১৫.৬ ইঞ্চি আপনি নিলে ভালো হয়। তবে ডিসপ্লের স্ক্রিন একটু উন্নত মানের হতে হবে। ভালো কালকের ডিসপ্লে না হলে চোখে সমস্যা হতে পারে।
প্রসেসর- যদি ল্যাপটপ বা পিসি এর গতি ভালো হয় তখন কাজের গতি বেড়ে যায়।সে ক্ষেত্রে আপনি ল্যাপটপের প্রসেসর যদি কমপক্ষে Core i3 হয় তাহলে কাজের গতি মোটামুটি ভালো হবে, আর প্রসেসর যদি Core i5 বা Core i 7 হয় তাহলে আরো ভালো হয়।
মেমোরি- ওয়েব ডিজাইনের জন্য খুব বেশি পরিমাণ স্পেস বা মেমোরির প্রয়োজন হয় না। তবে হার্ড ডিস্ক এর পরিবর্তে এসএসডি নেওয়া যেতে পারে। আর যদি আপনার বাজেটের পরিমাণ কম থাকে তাহলে ২৫০ জিবি হার্ড ডিস্ক দিয়ে কাজ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে খুব বেশি ফাইল জমা রাখতে পারবেন না।
Ram-ওয়েব ডিজাইন এর ক্ষেত্রে ৮ জিবি Ram হলে ভালো হয়। আপনার যদি বাজেট কম থাকে তাহলে ৪ জিবি দিয়ে কাজ চালাতে পারবেন। অনেক ল্যাপটপে Ram কম থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি ল্যাপটপে সেকেন্ড হ্যান্ড Ram সংযোজন করে নিতে পারবেন। তবে তার আগে চেক করে দেখতে হবে যে বাড়তি Ram লাগানোর কোন সুযোগ আছে কিনা।
ব্যাটারি-ওয়েব ডিজাইন সহ ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেকোনো কাজকর্ম করতে একটি ভালো মানের ব্যাটারির প্রয়োজন। কারণ ল্যাপটপ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে কাজ করার জন্য ল্যাপটপের মিনিমাম চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ব্যাক আপের দরকার। এবং অনেক সময় দেখা যায় ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যায়।
সে ক্ষেত্রে ব্যাটারি চার্জ যদি না থাকে তাহলে কোন কাজই করা যাবে না। তাই ল্যাপটপের যে কোন কাজের জন্য একটু ভালো মানের ব্যাটারির প্রয়োজন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো:
এ পর্যায়ে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব যে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো। আশা করছি আপনি আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকবেন। আমাদের দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপটি ভালো হবে তা নির্ভর করে আপনার কাজের ধরন এবং প্রয়োজনের উপর।
আরো পড়ুন: কম দামে ভালো স্মার্ট টিভি কোনটি জেনে নিন
গ্রাফিক ডিজাইনের জন্য হাই পাওয়ারফুল ল্যাপটপ এর প্রয়োজন হলেও, ডাটা এন্ট্রি বা কনটেন্ট রাইটিং বা ছোটখাটো কাজ এর জন্য একটি সাধারণ মানের বা সাধারণ ক্ষমতার হলেই চলে। আপনি যদি কোন ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে ল্যাপটপ কেনার সময় অবশ্যই ল্যাপটপের প্রসেসর, Ram, স্টোরেজ,ব্যাটারির ধরন ইত্যাদির উপরে খেয়াল রাখতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো তা নিম্নে কিছু নমুনা দিলাম-
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যাপটপ-আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং অথবা থ্রিডি মডেলিং এর মত কাজ করে থাকেন তাহলে এই ধরনের ল্যাপটপ আপনার প্রয়োজন হবে। উল্লেখিত কাজের জন্য আপনি একটি ভালো মনের সি পি ইউ এবং শক্তিশালী প্রসেসর থাকা খুবই প্রয়োজন।
যেমন- Dell XPS 15 অথবা MacBook Pro ল্যাপটপগুলো এই সমস্ত কাজের ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মধ্যম ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যাপটপ-ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ অর্থাৎ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট অথবা প্রোগ্রামিং কাজের জন্য মধ্যম বা মাঝারি মানের ক্ষমতা সম্পন্ন ল্যাপটপ আপনার জন্য যথেষ্ট এ ধরনের ল্যাপটপগুলোতে রয়েছে Core i5 বা Core i7 প্রসেসর, এসএসডি স্টোরেজ ৮ জিবি রেম খুব ভালো কাজ করে।
যেমন-Lenovo ThinkPad(লেনোভো থিংক প্যাড) বা HP Pavilion (এইস পি প্যাভিলিয়ন) এর মধ্যে আপনি ভাল মানে র অপশন বেছে নিতে পারেন।
বেসিক বা সাধারণ মানের ল্যাপটপ-আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজ অর্থাৎ কনটেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি এবং সাধারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করে থাকেন তাহলে আপনি একটি সাধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যাপটপ আপনার জন্য যথেষ্ট। তবে এক্ষেত্রে ল্যাপটপের ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘ হতে হবে এবং বহনযোগ্য হওয়া ভালো।
যেমন- HP,Dell,Acer,Aspire5,Asus VivoBook এগুলো উল্লেখিত কাজের জন্য ভালো ল্যাপটপ হতে পারে। এগুলোর মধ্যে আপনি যে কোন একটা অপশন বেছে নিতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে বর্তমানে একটি জনপ্রিয় এবং আধুনিক পেশা হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।কেউ মোবাইলের মাধ্যমে ছোটখাটো ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের হাত খরচ চালাচ্ছে। আবার কেউ কেউ আছেন ঘরে বসে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার করার চেষ্টা করছেন।
আবার অনেক স্টুডেন্ট আছেন লেখাপড়ার পাশাপাশি ল্যাপটপ দিয়ে ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে টাকা ইনকাম করছে। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের ধরন অনুযায়ী একেক ডিভাইস এক এক সার্ভিস দিয়ে থাকে। তাই এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হবে ল্যাপটপ ডিভাইসের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করা। ফ্রিল্যান্সাররা প্রতিনিয়ত ব্লগার, রাইটার কিংবা ফটোগ্রাফার কাজ করতে ল্যাপটপ কে সবসময় প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য উন্নত মানের ল্যাপটপ: ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বহু রকমের কাজের অপশন রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অনেক জটিল এবং এক্সপেন্সিভ কাজও রয়েছে। সেই কাজগুলোকে ভালোমতো করার জন্য একটি ভালো মানের বা উচ্চ মানের ল্যাপটপের প্রয়োজন।
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাধারণ কাজ গুলো করেন।তাহলে একটি সাধারন ল্যাপটপ হলেই যথেষ্ট। কিন্তু আপনি যদি ভারী লোড সম্পন্ন কাজ করে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই হাই কনফিগারেশন যুক্ত ল্যাপটপ কিনতে হবে। যেটা দিয়ে আপনি ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গেমিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, কনটেন্ট রাইটিং ও কঠিন কাজ গুলো করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং ল্যাপটপের জন্য বাজেট-আসলে ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজ গুলো করতে একটু উন্নত মানের ল্যাপটপ হলে সহজেই কাজগুলো অনায়াসে করা যায়। কিন্তু আপনার বাজেট যদি কম থাকে তাহলে কম টাকার মধ্যে নরমাল ল্যাপটপের জন্য আপনাকে ২৫ হাজার টাকা থেকে 40 হাজার টাকা গুনতে হতে পারে। এই টাকার মধ্যে মোটামুটি একটা ভালো মানের ল্যাপটপ কিনতে পাওয়া যাবে। যেমন -
- Dell Inspiron 14-3473 N 4000
- Lenovo IdeaPad G4135
- HP 15-DB0000AU
- Asus X540YA
Acer Aspire ES1-533 ফ্রিল্যান্সিংয়ের সাধারণ কাজগুলো করার জন্য আপনি এ সমস্ত ল্যাপটপ গুলোর যেকোনো একটি কিনতে পারেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ল্যাপটপের মাধ্যমে জটিল এবং এক্সপেন্সিভ কাজ সহজভাবে করতে হলে আপনাকে অবশ্যই উন্নতমানের ল্যাপটপ কিনতে হবে।
উন্নতমানের ল্যাপটপগুলোর দাম ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে আপনি খুব ভালো ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কিনতে পারবেন। যেমন-
- Asus VivoBook 15 K513EA Core i5 11 Generation Laptop
- Dell XPS 13 7390 Core i7 10 Generation Touch Screen Laptop
- MacBook pro
- Lenovo Chromebook
- Dell XPS 15
- Gigabyte Aero 15
ইত্যাদি ল্যাপটপগুলো আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভারী কাজ করার জন্য কিনতে পারেন। তবে এছাড়া আরো অনেক ব্রান্ডের বা মডেলের ল্যাপটপ রয়েছে যা অনেক উন্নত মানের আপনার বাঁধের যদি ভালো মানের হয় তাহলে উন্নত মানের ল্যাপটপ আপনি কিনতে পারেন।
তবে কেনার আগে আপনি একজন ভালো এক্সপার্ট সাথে নিয়ে গিয়ে তারপর ভালো করে যাচাই করে দাম ঠিক করে তারপর কিনলে আপনি ঠকবেন না।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ভালো মানের ল্যাপটপ কিভাবে চিনবেন-
ল্যাপটপের প্রসেসর-প্রসেসরের শক্তির উপরে নির্ভর করে ল্যাপটপের গতি সাধারণ বা নরমাল কাজের জন্য Intel Core i5 যদিও যথেষ্ট, তারপরেও ভারী সফটওয়্যার চালানোর জন্য কোর আই সেভেন বা তার উপরের প্রসেসর হলে ভালো হয়।
ল্যাপটপের Ram-ভালো কাজের জন্য ৮ জিবি রেম ভালো পারফরমেন্সের জন্য যথেষ্ট। তবে ভিডিও এডিটিং বা গ্রাফিক্স ডিজাইনের মতো ভারী কাজের জন্য ১৬ জি বি রেম বা তার বেশি হওয়া উচিত।
ল্যাপটপের ইস্টোরেজ-একটি ল্যাপটপের স্টরেজ এসএসডি ল্যাপটপ কে দ্রুতগতির করে তুলতে সক্ষম হয় এবং দ্রুত ডাটা রিড এবং রাইট করতে সহায়তা করে। এইচডিডি এটার গতি হচ্ছে ধীরগতি। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য কমপক্ষে ২৫৬ জিবি এসএসডি অথবা ১TB এইচডিডি থাকা উচিত।
ল্যাপটপের ডিসপ্লে-যেকোনো ধরনের ডিসপ্লে হলে চলে। তবে দীর্ঘ সময় কাজের সুবিধার্থে ফুল এইচডি রেজুলেশন আইপিএস প্যানেল থাকার ফলে রঙ্গের স্পষ্টতা এবং ভিউ ইন অ্যাঙ্গেল ভালো থাকে। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য যেমন- গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং এর জন্য উচ্চমানের বা ভালো মানের ডিসপ্লে প্রয়োজন।
ল্যাপটপের ব্যাটারি-যেহেতু ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ দীর্ঘ সময় ধরে করতে হয় এবং বাসা বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকলে এবং যেহেতু ল্যাপটপে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে কাজ করতে হয়, তাই আপনার ল্যাপটপের একটি ভালো মানের ব্যাটারির প্রয়োজন।এ ধরনের একটা উন্নত মানের ব্যাটারি যাতে করে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ব্যাকআপ দিতে পারে সেই ব্যাটারি ল্যাপটপের জন্য প্রয়োজন।
ল্যাপটপে পোর্ট এবং কানেক্টিভিটি-ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য ল্যাপটপের পর্যাপ্ত পোর্ট থাকা জরুরী।যেমন- ইউএসবি 3.0, এইচডিএমআই ইত্যাদি ।এছাড়া ওয়াইফাই 6 বা ব্লুটুথ ৫.০ কানেক্টিভিটি সুবিধা থাকলে ভালো হয়।
ল্যাপটপের ওজন এবং বহন-অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ বাইরে গিয়েও করা লাগে। সে ক্ষেত্রে ল্যাপটপটি হালকা এবং পাতলা হলে সহজেই বহনযোগ্য করা যায়।
গ্রাফিক্স কার্ড-গ্রাফিক্স ডিজাইন ভিডিও এডিটিং বা গেম ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড থাকা প্রয়োজন যেমন-NVIDIA/AMD
ল্যাপটপের কিবোর্ড এবং টাচপ্যাড-ফ্রিল্যান্সিং সহ অন্যান্য যে কোন কাজের জন্য একটি আরামদায়ক কিবোর্ড এবং সংবেদনশীল টাচপ্যাড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ব্যাকলিট কিবোর্ড অন্ধকারেও কাজ করার জন্য বিশেষ সুবিধা দেয়।
শেষ কথা- ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো:
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আপনাদের সুবিধার্থে ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন কাজ করতে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো এবং ফ্রিল্যান্সিং এর অন্যান্য কাজগুলো করার জন্য কোন ল্যাপটপ প্রয়োজন তা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।উল্লেখিত ল্যাপটপগুলোর মধ্যে আপনার পছন্দ হতে পারে এমন যেকোনো একটি ল্যাপটপ আপনি কিনতে পারেন।
পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার এবং কমেন্টস করে অন্যান্য ব্যক্তিদেরকে জানিয়ে দিন। যেন তারাও আমার এই আর্টিকেলটি পড়তে পারে এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার জন্য কি ধরনের ল্যাপটপ প্রয়োজন সেটা তারা জানতে পারেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url