কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি- কিডনি রোগী কত দিন বাঁচে
সম্মানিত পাঠক, কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি বিষয়টি জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আজ আমি কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব এবং কিডনি রোগী কতদিন বাঁচবে সেটাও আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আশা করি আপনি আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গে থেকে বিস্তারিত জেনে নিবেন যে কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি।
কিডনিতে পাথর হলে কি কি লক্ষণ দেখা দেয়:
কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি বিষয়টি জানার আগে কিডনিতে পাথর হলে কি কি লক্ষণ দেখা যায় সে সম্পর্কে আগে আমাদের জানা দরকার।কিডনি হল মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি অঙ্গ। এই কিডনির প্রধান কাজ হচ্ছে শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া।
আরো পড়ুন: ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়- ব্রেন স্ট্রোকের লক্ষণ
এক কথায় বলা যায় কিডনি হচ্ছে আমাদের শরীরে থাকা দুটি ফিল্টার যা দেহের ভিতরের সমস্ত বর্জ্য পদার্থ ছাকনির মত ছেঁকে বের করে দেয়। প্রস্রাবের নুন এবং খনিজ পদার্থ জমে দের শক্ত পদার্থ তৈরি হয়। তাকে কিডনি এর পাথর বলা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে কিডনির সমস্যা হয় বহু মানুষের।
অনেক সময় কিডনিতে পাথর হলে বোঝা যায় না বা কোন লক্ষণ থাকে না। তবে প্রাথমিক লক্ষণ হল কোমরের ব্যথা করা। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ মানুষ কিডনির যত্ন সম্পর্কে অবহেলা করে থাকি। কিডনির যত্নের এই অবহেলার কারণে কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে। কিডনি রোগের লক্ষণগুলো উল্লেখ করা হলো-
- কিডনিতে পাথর হওয়ার অন্যতম প্রধান লক্ষণ হচ্ছে বমি বমি ভাব অথবা মাঝে মাঝে বমি হওয়া এবং তার সাথে জ্বর হতে পারে।
- আমাদের দেহের পাঁজরের নিচের দিকে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়া এবং এই ব্যাথার তীব্রতা কোন কোন সময় কম বেশি হতে পারে।
- প্রস্রাবের রং কালচে লাল, লাল, কিংবা বাদামী রঙের প্রস্রাব হয়। এবং প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হয়।
- উপরের পেটের বা তলপেটের নিচে ডানে বামে ব্যথা হওয়া কিডনিতে পাথর হওয়ার আরেকটি লক্ষণ।
- কিডনিতে পাথর হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া এবং প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়া।
- আপনার যদি প্রস্রাবে অনেক দুর্গন্ধ হয় এবং ফেনা হয় তাহলে বুঝবেন যে কিডনিতে পাথর হয়েছে।
- পাথর মূত্র নালীতে আটকে গেলে কিডনি ফুলে যায়। কোন কোন সময় মারাত্মক সংক্রমণ হয়ে জীবনের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
কিডনির সাইজ কত হলে ভালো:
কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি বিষয়টি জানার জন্য কিডনি সাইজ কত হলে ভালো হয়। এটাও তো আমাদের জানা দরকার। তাই আসুন কিডনির সাইজ কত হলে ভালো তা আমরা জেনে নিই। কিডনির এভারেজ সাইজ এডাল্ট পুরুষদের প্রায় ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি(১০-১৩ CM) লম্বা এবং প্রস্থ হচ্ছে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি (5-7.5 CM) এবং ১ ইঞ্চি পুরুত্ব বা মোটা।
আর কিডনির ওজন প্রায় ১৫০ থেকে ১৬০ গ্রাম। বাম পাশের কিডনি ডান পাশের কিডনির চেয়ে হালকা একটু বড়। মহিলাদের কিডনি সাইজ পুরুষদের কিডনির তুলনায় প্রাকৃতিকভাবে অল্প একটু ছোট হয়। কিন্তু কার্যকারিতা নারী-পুরুষের প্রায় সমান থাকে। আবার কোন কোন বিশেষজ্ঞ বলেন মেয়েদের কিডনি সামান্য একটু ছোট হওয়ার কারণে পুরুষদের কিডনির চেয়ে কিছুটা কম শক্তিশালী হয়।
- শিশুদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কিডনির সাইজ হচ্ছে-
- তিন মাস থেকে এক বছর ৬.২ cm( 2.5 inches)।
- এক বছর বয়স থেকে ৫ বছর বয়স ৭.৩cm (3 inches)।
- পাঁচ বছর থেকে ১০ বছর বয়স ৮.৫ cm(৩.৫ inches)।
- ১০ থেকে ১৫ বছর ৯.৮ সি এম ( ৩.৯ inches)।
- 15 থেকে 19 বছর বয়স ১০. ৬ সিএম (৪.২ ইঞ্চি)।
- চিকিৎসকদের মতে,প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কিডনির সাইজ ১০ থেকে ১১ সিএম লম্বা,২.৫ সিএম থেকে ৩ সিএম মোটা বা Thickness এবং 3.5 থেকে 5 সিএম প্রস্থ। প্রাপ্ত বয়োস্কোদের জন্য গড় সাইজ হলো স্বাভাবিক বা ভালো।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়:
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় তা আলোচনা করার পরে কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি এই বিষয়টি নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করছি আপনি ধৈর্য সহকারে এই পোষ্টের সঙ্গেই থাকবেন। কিডনির পয়েন্ট রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা ০.৫ থেকে ১.২ মিলিগ্রাম এর মধ্যে থাকলে তাকে স্বাভাবিক মাত্রা বলা হয়।
যদি কোন কারণে এর বাইরে রক্তের মাত্রা ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়।তখন আমাদের ডায়ালাইসিস করার প্রয়োজন হয়। আমাদের দেহ থেকে খারাপ রক্ত বা অপরিষ্কার রক্ত বের করে দিয়ে নতুন রক্ত দেহের মধ্যে প্রবেশ করানো কে ডায়ালাইসিস বলা হয়। কিডনি আমাদের দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ ছাকনির মত ছেঁকে বাইরে বের করতে সাহায্য করে।
কিন্তু যখন কিডনি অকেজো হয়ে যায় তখন সে বর্জ্য পদার্থগুলো আমাদের দেহ থেকে রক্তের সাথে মিশে রক্ত দূষিত করে। আর ঠিক সেই সময় ডায়ালাইসিস করার জন্য চিকিৎসক পরামর্শ দেন। শিশুদের ক্ষেত্রে রক্তের ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা যদি দুই মিলিগ্রাম হয়ে থাকে তাহলে ডায়ালাইসিস এর প্রয়োজন পড়ে।
আর প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে রক্তের ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা পাঁচ মিলিগ্রাম এর মত হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস এর প্রয়োজন হয়। সুতরাং আমরা এই আলোচনার মাধ্যমে বুঝতে পারলাম যে কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস এর প্রয়োজন হয়।
কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি:
এ পর্যায়ে আমরা কিডনিতে যদি কোন কারণে পাথর হয়ে থাকে তাহলে কি করা উচিত বা করণীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের দেহে দুইটি কিডনি থাকে। এর মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে গেলে অন্যটি দিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। তবে দীর্ঘদিন এমন চলতে থাকলে বড় ধরনের বিপদ হয়ে যেতে পারে।
আরো পড়ুন: ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময়- যোগ্য ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভালো হয়
তাই আগে থেকেই আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। যদি কিডনিতে পাথর হয় তাহলে অনেক যন্ত্রণা পোহাতে হয় এবং এই কারণে প্রস্রাবের সাথে কখনো কখনো রক্ত বের হতে পারে। পেটে এবং কোমরে যন্ত্রণা করবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনাকে সেনোগ্রাফি এক্সের এর মাধ্যমে বুঝিয়ে দিবেন যে কিডনিতে পাথর হয়েছে কিনা।
তবে কিডনিতে পাথর হলে ওষুধ সেবনের মাধ্যমেও তা নিরাময় করা সম্ভব। ওষুধ খেয়েও যদি নিরাময় না হয় তাহলে অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে। তবে অপারেশন না করিয়েও কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা নিম্নরূপ-
আদা-আদা আমাদের জীবনে নানা ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়। শুধু তরকারি রান্নার ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয় না। এটা অনেক অসুখের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিয়মিত আদা খেলে শরীরের দূষিত পদার্থ নষ্ট হয়ে যায়। এবং কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তার সাথে লিভারও ভালো রাখতে দারুন ভূমিকা পালন করে।
হলুদ-হলুদ রান্নার কাজে ব্যবহার করা হলেও অসুখের ক্ষেত্রেও অনেক কাজে লাগে। কিডনি সমস্যার সমাধানের জন্য হলুদ খাওয়া আমাদের উচিত। সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হলুদ একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। রোজ সকালে খালি পেটে কয়েক টুকরো কাঁচা হলুদ খান। তাহলে দেখবেন রেজাল্ট ভালো পাওয়া যাবে।
ত্রিফলা -নিয়মিত ত্রিফলার পানি পান করলে কিডনির অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। ত্রিফলার পানি পান করলে প্রস্রাবের সাথে ছোটখাটো কিডনির পাথর বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাক। রাতে ত্রিফলা চূর্ণ ভিজিয়ে রাখু। সকালে ওই পানি খান। নিয়মিত এইভাবে খেলে ফলাফল অনেকটাই ভালো পাওয়া যাবে।
ধনে মসলা- কিডনির সমস্যা সমাধানে ধনে এক অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত খাবারের সাথে গোটা ধনে খেলে কিডনি সম্পর্কে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। ধনের এই মসলা আমাদের দেহ থেকে টক্সিন বের করে কিডনির অনেক উপকার করে থাকে। ধনে ভেজানো পানি পান করলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
পর্যাপ্ত পানি পান করা- প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে যাতে শরীর শুষ্ক না থাকে। সারাদিনে রাতে আপনি কতটুকু পানি পান করবেন তা নির্ভর করে আপনার দেহের উপর এবং সারা দিনের কাজের উপর এবং জলবায়ুর উপর।কিডনির সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে প্রধান উপায় হল প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।
কিডনিকে সতেজ এবং তাজা রাখতে পানির কোন বিকল্প নেই। কিডনি নষ্ট হওয়ার পিছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে পানি কম পান করা। তাই কিডনির যে কোন সমস্যা সমাধানে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। চিকিৎসকরা বলেন যাদের আগে পাথর কেটে পাথর আছে বা হয়েছে তাদের জন্য সাধারণত এমনভাবে পানি
পান করতে হবে বা তরল পান করতে হবে যাতে ২৪ ঘন্টায় ২ লিটারের মত প্রস্রাব হয় এবং প্রস্রাবের কালার যেন দেখতে পানির মতই হয়। আপনার অবস্থান ভেদে 24 ঘন্টা 4 থেকে 5 লিটার পানি পান করার প্রয়োজন হতে পারে।
তুলসী পাতা- তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যাসিড যা কিডনিকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুইবার করে তুলসীর রস খেলে বা তুলসীর পাতা দিয়ে কপি বা চা পান করে খেলে কিডনির সমস্যা অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে।
লেবুর রস: লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এ্যাসিড যা ক্যালসিয়াম জাত পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং কিডনিতে অবস্থিত ছোট পাথরগুলোকে ভেঙ্গে বের করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন নিয়মিত সকালে বিকালে দুইবার করে পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন তাহলে দেখবেন অনেক উপকার পাচ্ছেন।
আপেল সিডার ভিনেগার: এতে রয়েছে অ্যাসিটিক এসিড যা কিডনিতে পাথর দূর করে এবং ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। আপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন প্রতিদিন নিয়মিত এভাবে পান করলে কিডনি ভালো থাকবে।
ডালিম: ডালিমের রসের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং কিডনি থেকে পাথর ও অন্যান্য টক্সিন দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোধ ব্যবস্থাপত্রে ডাক্তারের লেখা নিয়ম অনুসরণ করুন।
মেথির বীজ: কিডনিতে পাথর দূর র করা সহ চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত মেথির বীজ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এক শ্রমিক ভাই সমীক্ষায় দেখা গেছে মেথির ব্রিজগুলো কিডনিতে জমাকৃত পাথর কমিয়ে দেয় এবং কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন নিয়মিত এক কাপ ফোটানো পানির সাথে দুই চা চামচ শুকনো মেথি মিশ্রণ করে প্রতিদিন পান করুন।
কালোজিরা- একটি গবেষণায় দেখা গেছে কালো জিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট পাথর তৈরিতে বাধার সৃষ্টি করে। ২০০ মিলিমিটার হালকা কুসুম গরম পানিতে হাফ চা চামচ শুকনো কালোজিরার বীজ মিশিয়ে দিনে দুইবার সেবন করুন। তাহলে কিডনি সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
উপরোক্ত উপায় গুলো অবলম্বন করার পরেও আপনার যদি কিডনিতে পাথর সমস্যার সমাধান না হয়। তাহলে জরুরী ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কিডনির পাথর দূর করার জন্য আপনার সার্জারি অথবা অপারেশন করা লাগতে পারে।
কিডনির পাথর দূরীকরণের চিকিৎসা-অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে,আমাদের দেহের কিডনির পাথর যদি ৪ মিলিমিটার এবং তার থেকে ছোট হয়। তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজে নিজেই প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে বেশি বেশি পানি পান করা উচিত। প্রয়োজনে ব্যথার ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
আর সেই সাথে কিছুদিন পর পর বা ছয় সপ্তাহ পর পর এক্সরে বা সিটি স্ক্যান করে দেখা দিতে পারে যে কিডনির পাথর কত বড় হয়েছে। অথবা প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে গেছে কিনা। কিডনির পাথর যদি 0.5 থেকে 2 সেন্টিমিটার আকার হয়। তাহলে শরীরের বাইরে থেকে শক ওয়েব দিয়ে পাথর গুঁড়িয়ে করে দেওয়া সম্ভব।
পরে এই গুড়াগুলো প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যাবে। কিডনি থেকে ছোট আকারের পাথর বের করার আরেকটি পদ্ধতি হলো আর আই আর এস (RIRS) এ সার্জারি পদ্ধতি দ্বারা প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে ফেক্সিবিল ইউরেটেরেস্কোপ দিয়ে কিডনিতে পথে লেজারের মাধ্যমে কিডনির পাথর গুড়া করে বের করে ফেলা হয়।
এছাড়া কিডনির পাথর অপসারণের সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি হল পিসিএনএল। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছোট একটি ছিদ্র করে যেকোনো ধরনের কিডনির পাথর ভেঙ্গে শতভাগ বের করা হয়ে থাকে আমাদের দেশেও উন্নত দেশের মতো পাথর এই ধরনের পদ্ধতির মাধ্যমে বের করা হয়ে থাকে। এখন আর পেট কেটে কিডনির পাথর বের করা হয় না এবং রোগীকে অজ্ঞান করার প্রয়োজন পড়ে না।
পিঠের দিকে ছোট্ট একটি ছিদ্র করে কিডনির পাথর বের করা সম্ভব।হাসপাতাল থেকে দুই থেকে তিন দিন পরেই রোগী বাসায় যেতে পারে। কিডনির পাথর অপারেশন করে বের করার পরে চিকিৎসকরা কিছু ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিবেন। এ সমস্ত ওষুধগুলো নিয়মিত সেবন করলেই আপনার কেমনে কথা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
কিডনি রোগী কত দিন বাঁচে:
কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি বিষয়টি নিয়ে উপরের অংশে আলোচনা হয়েছে। এ পর্যায়ে আমরা কিডনি রোগ হলে মানুষ কতদিন বাঁচে সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। আসলে বাচা মরা সব কিছু নির্ভর করে একমাত্র সৃষ্টিকর্তার উপর। কেউ কোনদিন, কোন সময় বলতে পারে না যে রোগী কতদিন বাঁচবে।
আরো পড়ুন :দুর্বল হার্ট সবল করার উপায়- হার্টের ব্লক দূর করার ব্যায়াম
তবে ডাক্তাররা একটি অনুমান করতে পারেন বা একটি ধারণা দিতে পারেন যে রোগীটি দুই থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত বাঁচতে পারে। দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব না। এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসকরা বলেন উভয় কিডনি নষ্ট বা ধ্বংস হয়ে গেলেও মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন। তবে লম্বা সময় ধরে বেঁচে থাকতে পারেন না।
যখন দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায় তখন ডায়ালাইসিস এর মাধ্যমে রোগীকে বেচে রাখা সম্ভব। এবং তখন অনেক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ওষুধ, খাবার এবং ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে সমস্ত দূষিত পদার্থ প্রস্রাব এবং মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করা হয়ে থাকে।
দুটি কিডনিই ড্যামেজ হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস ছাড়া মানুষ বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন উভয় কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর ডায়ালাইসিস করে মানুষ বা রোগী পাঁচ থেকে দশ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন। রোগীর বয়স যদি কম হয় তখন কিডনি পরিবর্তন করা হয়।
কিন্তু রোগের বয়স যখন বেশি হয় তখন ডায়ালাইসিস এর মাধ্যমেই বাঁচানো সম্ভব হয়। এর মাধ্যমে কোন সমস্যা ছাড়াই ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত বাঁচাতে পারে।
শেষ কথা -কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি:
আর্টিকেলের শেষ প্রান্তে এসে আমি এই কথা বলে শেষ করে দেবো যে ,কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি ,কিডনি রোগী কতদিন বাঁচে, কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ, কিডনি পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়, কিডনির সাইজ কত হলে ভালো কিডনি সংক্রান্ত ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আপনি পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং এই সমস্ত বিষয়ে কিছু উপকার পেয়েছেন।তাই এতক্ষণ আমার এই পোষ্টের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সাথে আরো ধন্যবাদ জানাবো আপনি পোস্টটিতে শেয়ার এবং কমেন্টস করে অন্যান্য ব্যক্তিদেরকে জানিয়ে দিন যেন তারাও ওই কিডনি সম্পর্কে কিছু উপকৃত হতে পারেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url