ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য-ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভালো হয়
সম্মানিত পাঠক-পাঠিকা, ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য বা ব্রেস্ট ক্যান্সার কি ভালো হয়?জানতে আমার এই আর্টিকেলের উপর চোখ রাখুন।আজ আমি ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য কিনা এবং ব্রেস্ট টিউমার মানে কি ক্যান্সার তা নিয়ে আমি আপনাদেরকে সঠিক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব।
আসুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য বা বেশ ক্যান্সার কি ভালো হয় কিনা।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ:
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য। বিষয়টি আলোচনা করার আগে রেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ কি কি তা আমাদের জানা দরকার। নারীদের স্তন বা ব্রেস্টের কিছু কোষ যখন অস্বাভাবিকভাবে বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে ওঠে তখন ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে। এই অতিরিক্ত কোষ গুলো ভাগাভাগি হওয়ার মাধ্যমে শরীরে টিউমারে পরিণত হয়।
আরো পড়ুন: জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় জানতে চোখ রাখুন
এবং রক্তনালী নাসিকার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতাই ক্যান্সার রোগের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্তন ক্যান্সার বা ব্রেস্ট ক্যান্সার নারীদের জন্য এক ভয়াবহ আদম্য বিষয়। সারা পৃথিবীতে নারীদের স্তন ক্যান্সারের কারণে মৃত্যু বরণের অন্যতম প্রধান কারণ।
ব্রেস্ট ক্যান্সার বাংলাদেশেও দিন দিন বেড়েই চলেছে। আগে চল্লিশের কম বয়সী ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগী পাওয়া যেত। অথচ বর্তমানে ১৭ বছরের বালিকা এই রোগের করুন পরিণতি হচ্ছে। গোটা বিশ্বে 11 অক্টোবর কে ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা দিবস হিসাবে পালিত করা হলেও, প্রতিবছর প্রায় ১৯ হাজার নারী স্তন
ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং রোগীদের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার মৃত্যুবরণ করেন।এক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসা করেও কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায় না এবং রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা বা দীর্ঘ জীবন যাপনের নিশ্চয়তা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তবে ব্রেস্ট ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করতে পারা যায় ।তাহলে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে বেশিরভাগ রোগীকে নিরাময় করা সম্ভব। ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলো হলো-
- স্তনের আকার এবং আকৃতিতে পরিবর্তন হওয়া ব্রেস্ট ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ।
- স্তনের ত্বকে খুঁজতে দেওয়া আর একটি ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ।
- স্তনের বোটা বা স্তনের যেকোনো অন্য অংশ ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া।
- স্তনের ফুসকুড়ি পড়া এবং চুলকানি বোঁটায় চুলকানি হওয়া।
- স্তনের কালার পরিবর্তন হওয়া যেমন- কালো হয়ে যাওয়া ,লাল চে ভাব এবং স্তন ফুলে যাওয়া ও গরম হয়ে যাওয়া।
- স্তনের ভিতরে বা বাহিরে চাকার মত শক্ত ফোলা ভাব।
- হঠাৎ করে আচমকা স্তন বোঁটা দিয়ে রক্ত ক্ষরণ।
স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেন যারা-
অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক যাদের হয়েছে। অথবা ১২ বছর বয়সে পরে পিরিয়ড হলে এবং ৫০ বছর বয়সের পরে মেনোপজ না হলে অর্থাৎ দেরিতে মেনোপজ হলে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
- বংশগত কারণে বা পারিবারিক ভাবে যদি স্তন ক্যান্সার থাকে যেমন- মা ,নানীদের ক্যান্সার থাকলে ।
- জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পিল দীর্ঘদিন যাবত খেলে।
- ডিএমপিএ ইনজেকশন দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করলে।
- বিভিন্ন ধরনের ধূমপান ,মধ্য পান ,অ্যালকোহল, তামাক সেবন ইত্যাদি করে থাকলে ।
- অনেক দেরিতে বাচ্চা বা ছেলে মেয়ে বা সন্তান জন্ম হলে ।
- আপনার বাচ্চাকে বুকের দুধ না খাওয়ালে ।
- অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি হওয়া এবং অতিরিক্ত মেদ হাওয়া।
উপরে উল্লেখিত ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি গুলো থাকলে ওষুধের মাধ্যমে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যেতে পারে।টামোক্সিফিন ও ক্যালেফসিকিন এর ওষুধগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এফডিএ অনুমোদিত যা ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি নিরাময় করে। পারিবারিকভাবে যাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী বিদ্যমান ছিল বা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলো প্রযোজ্য ।
ব্রেস্ট টিউমার মানেই কি ক্যান্সার:
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য বিষয়টি নিয়ে এর পরের স্টেজে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তবে তার আগে ব্রেস্ট টিউমার মানেই কি ক্যান্সার ? এই আতঙ্কিত বিষয়টি আমরা জানার পর আমরা জানবো বেশ ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য, নাকি নিরাময় করা সম্ভব নয়। স্তনে কোন টিউমার হলে ভয়ের কোন কারণ নেই।
আপনি আপনার টিউমার বায়োপসি করে অথবা মেমোগ্রাম টেস্ট করে দেখতে পারেন যে এটি ক্যান্সার নাকি টিউমার। যদি আপনার টিউমার খারাপ ধরনের হয় তাহলে এটি ক্যান্সার হিসাবে ধরে নেওয়া হয় এবং সেটা খুব দ্রুত বড় হতে থাকে এবং চামড়ার পরিবর্তন হতে থাকে।চিকিৎসকদের মতে, স্তনের সব টিউমারই ক্যান্সার নয়।
আরো পড়ুন: ফুসফুস ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে- রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ
কিছু কিছু টিউমার আছে যেগুলো ভালো টিউমার। আবার কিছু কিছু টিউমার আছে খারাপ যেগুলো ক্যান্সারে পরিণত হয়। এই টিউমার গুলোর মধ্যে যেটা বড় ২ সেন্টিমিটারের উপরে সেটা অপারেশন করে সারানো হয়। আর যদি বাদ বাকি ২ সেন্টিমিটারের ছোট থাকে তাহলে এগুলো পরবর্তী ফলোআপের জন্য রাখা হয়।পরবর্তীতে যদি এগুলো বড় হয়ে যায়।
তখন চিকিৎসক সেগুলো অপারেশন করে দিবেন। যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার ছাড়া অন্য কোন কারণে টিউমার হয় এবং সেটি ২ সেন্টিমিটার বড় হয় বা পর্যায়ক্রমে বড় হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে সেটি অপারেশনের মাধ্যমে দূর করতে পারেন।যদি ফোঁড়া বা অন্য কোন কারণে টিউমার হয় ও ওষুধ খেয়েও টিউমার ছোট না হয় বা দীর্ঘ সময়ও ভালো না হয়।
সেই ক্ষেত্রে অপারেশন করে ফেলে দেওয়া ভালো। যেটা ক্যান্সার সেটা ছোট থেকেই হয়। ভালো টিউমার সব সময় ভালো। এগুলো ক্যান্সারে পরিণত হয় না। টিউমার হলেই যে ক্যান্সার হবে এটা একটি ভুল ধারণা। আর যদি বায়োপসি অথবা মেমোগ্রাম টেস্ট করার পরে ক্যান্সার ধরা পড়ে।
তাহলে সবগুলোই অপারেশন করা হয়। সুতরাং আপনার স্তনে যদি কোন টিউমার হয়ে থাকে তাহলে ছোট হোক বড় হোক দেরি না করে আপনি সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং চিকিৎসক আপনাকে পরামর্শ দিবেন যে ৩৫ বছর বয়স যদি হয় আপনার তাহলে দুই বছর পর পর মেমোগ্রাম করতে হবে এবং যদি ৩৫ বছরের নিচে আপনার বয়স হয়ে থাকে তাহলে বায়োপসি অথবা আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট করার পরামর্শ দিবেন।
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য:
এ পর্যায়ে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য কি না বা স্তন ক্যান্সার ভালো করা সম্ভব কিনা তা আলোচনা করব। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, স্তন ক্যান্সার বা ব্রেস্ট ক্যান্সার নিরাময় বা ভালো করা সম্ভব। যদি প্রাথমিক অবস্থায় ব্রেস্টের এই সমস্যা ধরা পড়ে বা সনাক্ত করা হয় তাহলে পুরোপুরি বা বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই এটা ভালো করা সম্ভব।
ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন- ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সারের আকার, ক্যান্সার সীমাবদ্ধতা আছে, নাকি নাকি অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ছে ইত্যাদি বিষয় গুলো বিবেচনা করে চার ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির কথা বলে থাকেন চিকিৎসকরা।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের দুই ধরনের অস্ত্রপ্চোর করা হয়। স্তন থেকে টিউমার কেটে বাদ দেওয়া এবং সম্পূর্ণ স্তন অপসারণ করা ।এছাড়া রেডিয়েশন থেরাপি, কেমোথেরাপি ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে জানা গেছে বাংলাদেশের প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজারের বেশি
নারী স্তন ক্যান্সার বা ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এর মধ্যে ৬ হাজারের অধিক রোগী মৃত্যুবরণ করছেন। নারীদের মধ্যে ২০% বেশি ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এর সাথে কিছু কিছু পুরুষরাও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকদের মতে, রেস্ট ক্যান্সারের জন্য ৫ থেকে ১৫ বছর
পর্যায়ক্রমে ১৫ বছর বেঁচে থাকার হার পর্যায় ১ ও ২ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ৯% ।এবং এলাকা ভিত্তিক ছড়িয়ে পড়া অর্থাৎ কাছাকাছি নাসিকা গ্রন্থির নালীতে ছড়িয়ে পড়া টিউমারের পর্যায় ৩ এর জন্য ৮৪%। পর্যায় 4 ক্যান্সার রোগীরা নিরাময় হয়ে 5 বছর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ২৩%।
আমাদের দেশে প্রাথমিক অবস্থা নির্ণয়ের জন্য কোন স্কিনিং প্রোগ্রাম না থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার পর অথবা জটিল আকার ধারণ করার পর নারীরা চিকিৎসার জন্য শরণাপন্ন হচ্ছেন।
ব্রেস্ট ক্যান্সার অপারেশন খরচ কত:
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য বিষয়টি নিয়ে উপরের অংশে আলোচনা হয়েছে ।এ পর্যায়ে আমরা ব্রেস্ট ক্যান্সারের অপারেশন খরচ কত হতে পারে। তার একটি সম্ভাব্য ধারণা তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করছি আপনি আমাদের পোষ্টের সঙ্গেই থাকবেন। আসলে ব্রেস্ট ক্যান্সারের অপারেশন খরচ কত হতে পারে এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।
আরো পড়ুন: ফুসফুস ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ -চিকিৎসা খরচ ভারত
কারণ ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ হাসপাতালে সুবিধা, হাসপাতালে চিকিৎসা, ডাক্তারের দক্ষতা, চিকিৎসার পূর্ববর্তী খরচ ,পরামর্শ ফি, রক্ত পরীক্ষা ,বায়োপসি টেস্ট, অথবা মেমোগ্রাফি টেস্ট, কেমোরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, হাসপাতালে মান , স্থান ভেদে ডাক্তারের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি বিষয়ের উপর
একেক জায়গায় একেক ধরনের ব্র্রেস্ট ক্যান্সার অপারেশন খরচ হতে পারে। ভারতের কলকাতায় ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে পারে। বাংলাদেশ ব্রেস্ট ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম গত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মাত্র ৫ হাজার টাকায় ৫০ জন দরিদ্র রোগীদের স্তন ক্যান্সার অপারেশন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
কিন্তু এ ধরনের অফার বা সুযোগ সব সময় থাকে না। কমিউনিটি সেন্টার ট্রাস্ট দরিদ্র রোগীকে সহায়তা হিসাবে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ভারতের হায়দ্রাবাদে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ ৮৫ হাজার INR থেকে ৬ লাখ INR এর মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে। ভারতে স্তন ক্যান্সারের গড় খরচ হতে পারে ২৫০০ USD থেকে ৫ হাজার USD ।
অর্থাৎ ৩ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত। স্তন ক্যান্সারের অপারেশন খরচ বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশ গুলিতে একই পদ্ধতি এবং একই চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে ভারতে চিকিৎসা এবং অপারেশন খরচ অন্যান্য দেশগুলোর সাথে তুলনা করলে অস্ত্র প্রচারের মূল্য বা অপারেশন খরচ ৩০% থেকে ৫০% কম হবে।
সুতরাং আপনি যদি ব্রেস্ট ক্যান্সারে চিকিৎসা করাতে চান তাহলে সঠিক মত খোঁজখবর নিয়ে তারপরে সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করা ভালো হবে।
ব্রেস্ট টিউমার হওয়ার কারণ :
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য ,নাকি নিরাময় যোগ্য সম্ভব না , ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ, অপারেশন খরচ, রেস্ট টিউমার মানেই কি ক্যান্সার । এই সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পেরেছি এ পর্যায়ে আমরা ব্রেস্ট টিউমার হওয়ার কারণ কি বা কেন ব্রেস্ট টিউমার হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। কারণগুলো হল-
- পুরুষদের বা নারীদের স্তনের মধ্যে থাকা কোষগুলি যখন অস্বাভাবিকভাবে বা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে শুরু করে তখন ব্রেস্ট ক্যান্সারের উৎপত্তি হয়। অর্থাৎ স্তনের মধ্য থাকা বিভিন্ন কোষ গুলো অতিরিক্ত বেড়ে ওঠার কারণে শরীরে স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন হয়।
- নারীদের এবং পুরুষদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্তন টিউমার হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। ৫০ বছরের উপরে মহিলাদের মধ্যে ব্রেস্ট টিউমারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
- বংশগত কারণে ব্রেস্ট টিউমার হতে পারে। অর্থাৎ পরিবারের মা,বাবা, নানীর যদি ব্রেস্ট টিউমার বা ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে থাকে তাহলে আপনারও ব্রেস টিউমার হতে পারে।
- অতিরিক্ত ধূমপান ,মধ্যপান, এ্যালকোহল বা তামাক দ্রব্য সেবন করলে ক্যান্সার হতে পারে বা ব্রেস্ট টিউমার হতে পারে।
- হরমোন থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণেও ব্রেস্ট টিউমার বা ক্যান্সার হতে পারে।
- প্রদাহ জনিত কারণে স্তন ক্যান্সার বা টিউমার হতে পারে।
- একটি গবেষণায় বোঝা গেছে যে স্তনের টিউমার পুরুষদের সাথে কিছু বিশেষ সম্পর্কের কারণে হতে পারে।
উল্লেখিত পয়েন্ট গুলো ব্রেস্ট টিউমার বা ব্রেস্ট ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। তাই এই সমস্ত ক্ষেত্রে আপনি দেরি না করে তাড়াতাড়ি একজন অভিজ্ঞ সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হন।
ব্রেস্ট ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায়?
ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য ,নাকি নিরাময় যোগ্য সম্ভব না।তা উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি যে রেস্ট ক্যান্সার হলে মানুষ মারা যায়, নাকি বেঁচে থাকে, নাকি কত দিন বেঁচে থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে , ব্রেস্ট ক্যান্সার হলেই যে মানুষ মারা যাবে বিষয়টি এমন নয়।
প্রথম থেকেই বা স্টেজ 1 থেকেই যদি ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসা করা হয়। তাহলে প্রায় 99 শতাংশ রোগী বেঁচে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থাতেই বা প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার দ্রুত সনাক্ত করা গেলে পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব। আমাদের দেশে সচেতনতার অভাবে অনেক রোগী বুঝতেই পারে না যে
ব্রেস্ট টিউমার বা বেস্ট ক্যান্সার হয়েছে এবং অনেকেই লজ্জায় সহজে মুখ খোলেন না। সেজন্য তারা বড় আকারের ঝুঁকিতে থাকেন। চিকিৎসকরা আরো বলেন, স্তন ক্যান্সারে রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।স্তন ক্যান্সারের জন্য আগে থেকেই সতর্ক না হলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।
আরো পড়ুন: ব্লাড ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে মানুষ জানতে চোখ রাখুন
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে বিশ্বে প্রতি ৮ জন নারীর মধ্যে ১ জনের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিবছর 10 লাখেরও বেশি নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক রোগীই মারা যায়। ক্যান্সার গবেষণা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাব মতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায়
14000 নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এর মধ্যে প্রায় ৬ হাজারের বেশি মারা যাচ্ছেন। স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর জন্য চিকিৎসকরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো হল-
- ধূমপান, মদ্যপান,অ্যালকোহল বা তামাক জাত দ্রব্য সেবন করা থেকে বিরত থাকুন।
- নিয়মিত শরীর চর্চা করে আপনার অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুন।
- শিশুকে আপনার বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়ান ।তাহলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যাবে।
- মেনোপজের পূর্বে হরমোন থেরাপি সীমিত রাখার চেষ্টা করুন।
- বছরে দুইবার আপনার ব্রেস্ট ক্যান্সার বা টিউমার আছে কিনা তা পরীক্ষা করুন।
- স্তন টিউমার ছোট হোক বড় হোক শুরু হলেই চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হন। তাহলে আপনার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
- নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন ।
- নিয়মিত প্রতিদিন বেশি বেশি করে পানি পান করুন।
- বাড়িতে বসে নিজে নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করার চেষ্টা করুন। 18 বছরের পরে থেকে নিজে নিজে স্তন পরীক্ষা করুন।
শেষ কথা- ব্রেস্ট ক্যান্সার কি নিরাময় যোগ্য:
প্রিয় পাঠক পাঠিকা, ব্রেস্ট ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য কিনা এবং এর সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সারের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আমি বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করার জন্য চেষ্টা করেছি। ব্রেস্ট ক্যান্সার আসলে নিরাময় যোগ্য। যদি প্রথম থেকেই বা প্রাথমিক পর্যায়ে এটি শনাক্ত করে চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হন তাহলে শতভাগ রোগী বেঁচে যাওয়া সম্ভবনা থাকে।
আর যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত না হয়ে স্টেজ 3 থেকে স্টেজ 4 এ চলে আসে। তাহলে ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশি হয়ে যেতে পারে।আশা করছি আপনি পোস্টের প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত পড়বেন বা মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। পড়লে ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে আপনি অনেক উপকার পাবেন।তাই পোস্টটি পড়ুন এবং কমেন্টস বক্সে কমেন্ট করুন।
তার সাথে শেয়ার করে অন্যান্য ব্যক্তিদেরকে জানিয়ে দিন ।যেন তারাও কিছুটা হলেও ব্রেস্ট ক্যান্সার সম্পর্কে উপকৃত হতে পারেন ।এতক্ষণ আমার এই পোস্টের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url