জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় জানতে চোখ রাখুন

সম্মানিত পাঠক, জরায়ু ক্যানসার হলে কি মানুষ মারা যায় জানতে আমার এই আর্টিকেলের উপর চোখ রাখুন। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় কি না। 

আসুন তাহলে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে আমরা জেনে নেই জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় নাকি বেঁচে থাকে। এবং সেই সাথে জরায়ু মুখের ক্যান্সার হওয়ার লক্ষণ কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায়:

জরায়ু মুখের ক্যান্সার বা সার্ভিকাল ক্যান্সার হল জরায়ুর অন্তরালে অস্বাভাবিক কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি হওয়া কে বুঝায়।জরায়ুর ক্যান্সার ইংরেজি Cervical Cancer জরায়ুর মুখে ক্যান্সার নারীদের জন্য একটি জটিল, ভয়াবহ এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সার সারা বিশ্ব নারীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।

আরো পড়ুন:ফুসফুস ক্যান্সারের চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশ-চিকিৎসা খরচ ভারত

সারা বিশ্বে নারীদের মধ্যে জরায়ু মুখ ক্যান্সারের জন্য প্রতি ২ মিনিটে একজন নারী জরায়ুর মুখে ক্যান্সারে মারা যায় এবং প্রত্যেক বছর পৃথিবীতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ নারী নতুন করে অক্রান্ত হয়ে থাকেন। জরায়ু ক্যান্সারের অক্রান্ত হওয়া  রোগীদের মধ্যে সাধারণত ১৫ বছর থেকে 50 বছর বয়সের নারীদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যায়। 

কিন্তু ক্যান্সার ধরা পড়ার প্রায় ৫ থেকে ১৫ বছর পূর্বেই একজন নারীর মধ্যে জরায়ুর ক্যান্সারের ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে,অধিকাংশ নারী চিকিৎসা না করার কারণে তাদের বেঁচে থাকার আর ৫০% কমে যায় ।যে সমস্ত রোগীরা প্রথম থেকে চিকিৎসা করান তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাব্য হার 90% । 

অনেক নারীরা তাদের জরায়ুর সমস্যা হলে সহজেই বুঝতে পারেন না অথবা লজ্জায় চিকিৎসা করা থেকে বিরত থাকেন। যার কারণে এই রোগ আরো কঠিন আকার ধারণ করে। ফলে রোগীর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তবে সচেতনতার মাধ্যমে জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। 

সচেতন না হলে এই রোগের বিস্তার আরো দিন দিন বেশি হয়ে যাবে। মাতৃত্ব  ও নারীত্বের জন্য নারীদের সংবেদনশীল অঙ্গ হচ্ছে জরায়ু। নারীদের জীবনের কোন না কোন সময় বেশিরভাগ নারী জ্বরায়ূ মুখে ক্ষত এবং প্রদাহে আক্রান্ত হয়ে থাকেন । এই জ্বরায়ূ মুখের ক্যান্সার সারা বিশ্ব ব্যাপী নারীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

জরায়ু মুখের ক্যান্সারের জন্য সারা পৃথিবীতে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ মহিলা মৃত্যুবরণ করে থাকেন এবং নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় 50 থেকে 60 লক্ষ। আর আমাদের দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশে প্রায় ১৭৫০০ নারী নতুন করে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং প্রায় 10000 নারী এই রোগে মৃত্যুবরণ করছেন। 

এবং প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ জন নারী জরায়ু মুখের ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করছেন। তাহলে উপরের আলোচনা থেকে আমরা এটাই ধরে নিতে পারি যে জরায়ুতে ক্যান্সার হলে মানুষ মারা যায়। তবে প্রত্যেক জনই মারা যায় না। কিছু মহিলা যাদের প্রথম থেকে জ্বরায়ুর ক্যান্সার ধরা পড়ে তাদের চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব। 

আর যারা অবহেলা করেন অথবা বুঝতে পারেন না যে জরায়ু আনসার হয়েছে অথবা বুঝতে পারলেও লজ্জায় কাউকে বলতে পারেন না।তারা চিকিৎসা না করার কারণে মারা যেতে পারেন।

জরায়ু মুখের ক্যান্সার হওয়ার লক্ষণ কি কি:

জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় এবং জরায়ু ক্যান্সারের কি কি লক্ষণ সে সম্পর্কে জানতে আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন। জরায়ু ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো-

  • যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্ত বের হওয়া বা স্রাব ।
  • প্রস্রাব বা যৌন মিলনের পরে ব্যাথা হওয়া। 
  • মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে রক্তপাত। 
  • প্রচন্ড গন্ধ যুক্ত যোনি থেকে স্রাব আউট হওয়া।
  • সহবাসের পরে বা মেনোপজের পরে রক্তপাত ।
  • রক্তের সাথে যোনি স্রাব।
  • গোপনাঙ্গের চতুর পাশে চাপ লাগা এবং ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করা।  
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে অস্বস্তি লাগা ইত্যাদি জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
  • পেট ফুলে যাওয়া এবং প্রচন্ড ব্যথা হওয়া।
  • বমি বমি ভাব লাগা এবং বমি হাওয়া জরায়ু ক্যান্সারের আরেকটি লক্ষণ। 
  • ক্ষুধা কমে যাওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া অথবা ওজন অতিরিক্ত বেশি কমে যাওয়া, জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। 

উল্লেখিত লক্ষণ গুলো দেখা দিলে আপনাকে বুঝতে হবে যে জরায়ুতে ক্যান্সার হয়েছে। আপনি দেরি না করে তাড়াতাড়ি সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা করতে হবে। চিকিৎসক আপনাকে তখন পরীক্ষা করে দেখবেন যদি ওষুধের মাধ্যমে ক্যান্সার ভালো করা সম্ভব হয় তাহলে চিকিৎসক আপনাকে ঔষধ সেবন করার পরামর্শ দিবেন এবং যদি সার্জারি বা অপারেশন করার প্রয়োজন হয় তাহলে দেরি না করে সার্জারি করে নেওয়াই ভালো।

চিকিৎসা- আপনার যদি জরায়ু ক্যান্সার হয়ে থাকে তাহলে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক আপনাকে ওষুধ সেবন করার পরামর্শ দিতে পারেন। ওষুধ সেবন এর মাধ্যমে যদি জরায়ুর ক্যান্সার নিরাময় না হয়। তাহলে চিকিৎসক আপনাকে সার্জারি বা অপারেশন করার মাধ্যমে আপনার জরায়ু কেটে ফেলার পরামর্শ দিতে পারেন। 

আর জরায়ু যখন কেটে ফেলবে তখন আপনার ধরনের সমস্যা হতে পারে। যেমন- সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হওয়া বা অক্ষমতা। মুখে চুল বৃদ্ধি হতে পারে এবং জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। চামড়া কুঁচকে যাবে, যৌনাঙ্গ দীর্ঘায়িত রক্তক্ষরণ হবে, অনুভূতি কমে যাবে, সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব করা, মাতৃত্ব আবেগের ক্ষতি, সহবাস করতে ভালো না লাগা ইত্যাদি নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। 

এ সমস্ত কারণে দাম্পত্য জীবনে এবং সংসার জীবনে নানা ধরনের সীমাহীন যন্ত্রণা ও অশান্তি পোহাতে হয়। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উন্নত চিকিৎসা জরায়ু কেটে না খেলে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই হচ্ছে। কোন অস্ত্রপ্চোর ছাড়া অথবা কোন কাটাকাটি ছাড়া রক্তপাতহীন এবং 

ঝুঁকিমুক্ত অত্যাধুনিক লেজার ভেকোরাইজেশন পদ্ধতির চিকিৎসার মাধ্যমে জরায়ু না কেটে ফেলে নারীত্ব ও মাতৃত্ব অক্ষুন্ন রেখে অল্প সময়ে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করা সম্ভব।

জরায়ুর ভ্যাকসিনের দ্বারা চিকিৎসা- ৯ বছর বয়সের পর থেকে জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ মূলক টিকা দেওয়া হয়। এই টিকার মধ্যে মোট তিনটি ডোজ টিকা নিতে হয়। প্রথম ডোজের এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ এবং প্রথম ডোজের ছয় মাস পর তৃতীয় ডোজ নিতে হয়। এই ভ্যাকসিন বা টিকা গ্রহণের পাশাপাশি 

মাঝেমাঝে জরায়ু ক্যান্সারের পরীক্ষা করলে জরায়ুর আক্রমণের হার অনেকটাই কমে যাবে। এই ভ্যাকসিনের ডোজ গুলো সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু বেসরকারি বা প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে এ ডোজগুলো দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, নিয়ম অনুযায়ী ৯ বছর থেকে ২৫ বছর বয়সে এই টিকা কার্যকর হয়। তাদের তত্ত্বাবধানে থাকা এই ভ্যাকসিন গুলো প্রায় ৫০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।

জরায়ু ক্যান্সার হলে কি বাচ্চা হয়:

জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় কি না বিষয়টি আলোচনা করতে গিয়ে জরায়ুতে ক্যান্সার হলে মেয়েদের বাচ্চা হয় কিনা সে সম্পর্কে কিছু তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি। যদি আপনি পোষ্টের সঙ্গে থাকেন তাহলে আপনি বিষয়টা জানতে পারবেন। 

আরো পড়ুন: ফুসফুস ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে- রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ

চিকিৎসকদের মতে, জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার পর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান ধারণ হয়তো সম্ভব হবে না। তবে এ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি এর মাধ্যমে বাচ্চা হওয়া সম্ভব বা মা হওয়া সম্ভব। তাই হিষ্টেরেকটমি, রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি এর আগে ওভাম বা ভ্রুন সংরক্ষণ করা উচিত। 

এই সংরক্ষণের ফলে ক্যান্সারের চিকিৎসায় ইউটেরাস বাদ না পড়লে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে মহিলাদের গর্ভধারণ করা যায়। অপরদিকে, যদি ইউটেরাস বাদ পড়ে যায় তাহলে সারোগেসির এর মাধ্যমেও মা হওয়া সম্ভব হবে। ক্যান্সারের প্রথম পর্যায়ে কিন্তু স্বাভাবিক পথে অথবা 

আইভিএফ, আই ইউ আই ইত্যাদি পদ্ধতি অবলম্বন করে গর্ভধারণ করা সম্ভব। রেডিয়েশন থেরাপি অথবা কেমোথেরাপি নিতে হলে ছয় মাস অপেক্ষা করে তার পর সন্তান নিলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে অথবা ছয় মাস অপেক্ষা করার পর আপনার প্রয়োজন মত বাচ্চা নেওয়া উচিত। 

একজন মহিলা যদি শোনেন যে তার ক্যান্সারের কারণে সন্তান ধারণের ক্ষমতা থাকবে না বা থাকে না। তাহলে তার মনের ভিতরে বিষন্নতার সৃষ্টি হয় কারণ যত অসুখ আছে তার মধ্যে ক্যান্সার হচ্ছে সবচাইতে জটিল এবং কঠিন এবং যথেষ্ট গুরুতর।ফলে ক্যান্সার হলে রোগীর মনের মধ্যে নানা রকমের উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। 

সুতরাং জরায়ু ক্যান্সার শুরু হওয়া মাত্রই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা করলে রোগীর বাচ্চা হতে কোন সমস্যা হবে না। আবার জরায়ুতে যদি টিউমার থাকে, টিউমার অংশটি যদি সঠিকভাবে অপারেশন অথবা সার্জারি করে তুলে নেয়া হয়। তাহলে সন্তান ধারণ করতে কোন অসুবিধা হওয়া হবে না ।

কিন্তু যদি টোটাল হিস্টারিসিওমী Hysterecyomyy করা হয় তাহলে আর কোন উপায় থাকে না। আবার একটি মাত্র টিউমার নিষ্কাশিত হয়ে থাকলে সন্তান জন্মদানে কোন প্রকার অসুবিধা থাকে না।

জরায়ু অপারেশন করতে কত টাকা লাগে:

জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় এই বিষয়টি নিয়ে উপরের অংশে মোটামুটি ভাবে আলোচনা করেছি। এ পর্যায়ে আমি আপনাদের সাথে জরায়ু অপারেশন করতে কত টাকা লাগতে পারে তার একটি সম্ভাব্য ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব আশা করছি আপনি আমার এই আর্টিকেলে সঙ্গেই থাকবেন। 

জরায়ু অপারেশন করতে আসলে কত টাকা লাগবে এটা সঠিক হিসাব দেওয়া মুশকিল। হাসপাতাল অথবা ক্লিনিক এর অবস্থা, চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা, ওষুধের দাম, রোগীর অবস্থা, স্থান ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে অপারেশন খরচ কম বেশি হয়। আপনি যদি বাংলাদেশের ঢাকাতে চিকিৎসা করাতে চান তাহলে আপনার খরচ হতে পারে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার টাকা। 

তবে সেখানে যাওয়ার আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট খরচের বিষয়টা জেনে নিয়ে তারপরে সেখানে গেলে ভালো হয়। জরায়ুর টিউমার অপারেশনের খরচ টিউমারের অবস্থান, অস্ত্র প্রচারের ধরন, রোগীর বীমা কভারেজ ইত্যাদি এর মত বিভিন্ন কারণের উপর ভিত্তি করে খরচের পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে। 

খরচ ১ লাখ থেকে কয়েক লাখ পর্যন্ত হতে পারে। অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে জরায়ু ক্যান্সারের অপারেশন খরচ অনেক কম।ভারতে জরায়ু সার্জারির গড় খরচ হতে পারে প্রায় 1500 USD থেকে 3500 USD পর্যন্ত। নিম্নে ভারতের কয়েকটি অঞ্চলের জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারির গড় খরচের তালিকা উল্লেখ করা হলো-

  • ভারতের নয়া দিল্লিতে সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারি খরচ ১  লক্ষ রূপি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার রূপি খরচ হতে পারে।
  • ভারতের মুম্বাইয়ে সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারি খরচ ১ লাখ ১০ হাজার রুপি থেকে ২ লাখ ৯০ হাজার রুপি পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
  • ভারতের চেন্নাই তে সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারি খরচ ১ লাখ ৪০ হাজার রুপি থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার রুপি।
  • ভারতের হায়দ্রাবাদে সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারে সার্জারি খরচ ১৭০,০০০ রুপি থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার রুপি পর্যন্ত খরচ হতে পারে। 
  • ভারতের জয়পুরে সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারি খরচ ১ লাখ ২০ হাজার রুপি থেকে ৩ লাখ রুপি পর্যন্ত হতে পারে। 
  • ভারতের কলকাতায় সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারি খরচ ১ লাখ রুপি থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার রুপি পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
  • ভারতের ব্যাঙ্গালোরে সর্বনিম্ন জরায়ু ক্যান্সারের সার্জারি খরচ ১ লাখ ২০ হাজার রুপি থেকে ৩ লাখ রুপি পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

উল্লেখিত অঞ্চল ভেদে জরায়ু ক্যান্সারে সার্জারি অথবা অপারেশন খরচ আনুমানিক হারে উল্লেখ করা হলো ।এক্ষেত্রে আপনি যদি ভারতে জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা অথবা সার্জারি করতে চাইলে ভালো করে জেনে বুঝে ভারতের হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে খরচের ব্যাপারটা জেনে নিয়ে তারপরে সেখানে গেলে চিকিৎসা করাতে সুবিধা হবে।

জরায়ু ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিকার: 

জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় এবং জরায়ু ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিকার সহ জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জানতে আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন। সাধারণত মানুষের শরীরে ক্যান্সারের মধ্যে জরায়ু ক্যান্সার হচ্ছে মহিলাদের একটি জটিল এবং কঠিন রোগ।এই রোগ হলে মেয়েরা নানা ধরনের দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন। 

তবে চিন্তা ভাবনা না করে এই ধরনের সমস্যা যদি হয়ে থাকে তাহলে বর্তমানে টিকার আবিষ্কার হয়েছে। এই প্রতিষেধক টিকা আপনি ব্যবহার করতে পারেন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে এই রোগের অবস্থা অনেকটা কমিয়ে আনতে পারেন। চিকিৎসকের মতে, সময় মতো সঠিক চিকিৎসা নিলে জরায়ু ক্যান্সার সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যাবে।জরায়ু ক্যান্সারের কারণগুলো নিম্নরূপ-

  • অল্প বয়সে বিয়ে করা বা যৌনসংগমে লিপ্ত থাকা। অল্প বয়সে যৌনভাবে সক্রিয় হওয়া আপনার HPV সংক্রমণ এবং জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 
  • HPV 16  & HPV 18 সারভাইকাল বা জরায়ু ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়াতে পারে এবং সেগুলোকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ HPV বলা হয়
  • অল্প বয়সে বা অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ হওয়া। 
  • একাধিক সন্তান গ্রহণ করা বা একাধিক বার গর্ভধারণ। একাধিক বার অর্থাৎ তিন বা তার বেশি বার কর্ণ মেয়াদী গর্ভধারণ করলে জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • একাধিক যৌনসংগী থাকলে যৌন সংক্রমিত সংক্রমণ হিসেবে HPV এর সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বাড়ে এবং এটি সারভাইকাল বা জরায়ু মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
  • ধূমপান, অ্যালকোহল, মদ্যপান, তামাক সেবন ইত্যাদি জরায়ু ক্যানসারের কারণ হতে পারে। তামাকের মধ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পদার্থ বা উপাদান রয়েছে যা শুধুমাত্র ফুসফুস কেই সংক্রমিত করে না, বরং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেউ প্রভাবিত করতে পারে। যে মহিলারা ধূমপান করে তাদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার হওয়ার রোগী অন্যান্যদের চেয়ে অনেক বেশি।
  • জরায়ু মুখে ভাইরাসের সংক্রমণ। এই ভাইরাসের নাম প্যাপিলো মা ভাইরাস। এই ভাইরাসটি ছড়ায় যার শরীরে  প্যাপিলোমা ভাইরাস আছে তার সাথে যৌন মিলন করলে।
  • জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বিশেষ করে ৫ বছরের অধিক সময় ধরে পিল খেতে থাকলে জরায়ু ক্যান্সার হতে পারে। 
  • যাদের শরীরে এইভস, সিফিলিস ,গনোরিয়া ইত্যাদি রোগ থাকে তাদের সাথে যৌন সঙ্গমে করলে এই জরায়ু ক্যান্সার হতে পারে।

উল্লেখিত কারণ ছাড়াও অন্যান্য কারণেও জরায় মুখের ক্যান্সার হতে পারে। তাই উপরোক্ত কারণগুলো ফলোআপ করুন তাহলে জরের মুখে ক্যান্সার হতে রক্ষা পেতে পারেন।

প্রতিকার সমূহ-

  • অল্প বয়সে অর্থাৎ ১৮ বছরের কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে না দেওয়া।
  • একাধিক সন্তান ধারণ করা থেকে বিরত থাকা । এখানে দুটি সন্তানই যথেষ্ট।
  • একাধিক যৌন সঙ্গী এড়িয়ে চলা।
  • ধূমপান, মধ্যপান ,অ্যালকোহল বা তামাক সেবন বা যেকোন মাদক সেবন এড়িয়ে বলুন। ধূমপান সার্ভিকাল ক্যান্সারের ঝুঁকি  বাড়াতে পারে। তাই ধূমপান ছেড়ে দিন।
  • ৯ থেকে ৫০ বছর বয়সের মেয়েদেরকে যারা মুখের ক্যান্সারের প্রতিশেধক টিকা গ্রহণ করুন ।
  • ২৫ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত নারীদের প্রতি তিন বছর পর পর জরায়ু মুখের ক্যান্সার পরীক্ষা করুন। 
  • সকল চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের জন্য প্রাথমিক সনাক্তকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত জরায়ু ক্যান্সার পরীক্ষা করা। 
  • HPVএর বিরুদ্ধে টিকা গ্রহণ করা। এটি একটি ভাইরাস যা সার্বিকাল ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন গ্রহণ করলে এ ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
  • যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করুন। যাতে এইচপিভি এবং অন্যান্য যৌনবাহিত অক্রান্ত হওয়ার রোগ কমে যেতে পারে।
  • স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন ভালো স্বাস্থ্যবিধি এইচপিভি বিস্তার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখা জরায়ু মুখের ক্যান্সার কমাতে পারে।
  • অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং তাদের পরামর্শ মেনে চলুন। 

যদি আপনার জরায়ু ক্যানসার অথবা জরায়ুর মুখের ক্যান্সার হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে দ্রুতগতিতে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে ভালোমতো চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তার যদি মনে করেন যে অপারেশন বা সার্জারি করা লাগবে তখন সার্জারি করে নেওয়াই ভালো।

লেখকের শেষ কথা-জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায়: 

প্রিয় পাঠক পাঠিকা, জরায়ু ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায়, নাকি বেঁচে থাকে সেটা জানার জন্য আমি এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছি এবং তার সাথে জরায়ু ক্যান্সার সম্পর্কিত আরো কিছু তথ্য শেয়ার করার চেষ্টা করেছি ।আশা করছি পোস্টটি পড়লে আপনি অনেক উপকৃত হতে পারবেন। 

আরো পড়ুন: ব্লাড ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে মানুষ জানতে চোখ রাখুন

তাই প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এবং সেই সাথে আরও ধন্যবাদ জানাই যে আপনি যেন কমেন্টস এবং শেয়ার করার মাধ্যমে অন্যান্য ব্যক্তিদেরকে পড়ার জন্য সুযোগ করে দিলে তারাও উপকৃত হতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url