মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয়-মেয়েদের বুকে ব্যথা কেন হয়


আপনি যদি মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি এবং মেয়েদের বুকে ব্যথা কেন হয় তা যদি জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। অনেক মানুষ জানতে চায় মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি এবং মেয়েদের বুকে ব্যথা কেন হয়। 

তাই আজ আমি আলোচনার মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেবো যে মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি এবং মেয়েদের বুকে ব্যথা কেন হয়। 

মেয়েদের বুকে ব্যথা কেন হয়?

মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি? সে সম্পর্কে জানার আগে মেয়েদের বুকে ব্যথা কেন হয় বা বুকে ব্যথার কারণ কি তা আমাদের জানা দরকার।মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। বিভিন্ন কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে মহিলাদের অন্যান্য ব্যথা, অস্বস্তির কারণে মেয়েদের বুকে ব্যথা হতে পারে।

আরো পড়ুন: হঠাৎ বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি তা জেনে নিন

তবে মনে রাখবেন বুকে ব্যাথা হলেই যে হৃদরোগ বা হার্ট এ্যাটাক হবে এমন নয়। মহিলা এবং পুরুষ উভয়ের হার্ট অ্যাটাকের কারণ একই ধরনের হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আলাদা কারণে মহিলাদের হাট অ্যাটাক হতে পারে। যেমন- 

  • উচ্চ রক্তচাপ-উচ্চ রক্তচাপের কারণে মেয়েদের বুকে ব্যথা হতে পারে এবং সেই সাথে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
  • উচ্চ কোলেস্টেরল- হরমোনের ভারসাম্য ঠিক না থাকলে কোলেস্টরেল বাড়ার কারণে হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
  • মেনোপজ-মেনোপজের কারনে ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার কারণে মেয়েদের বুকে ব্যথা হতে পারে এবং তারপরে হৃদরোগের সম্ভাবনা হতে পারে।
  • ধূমপান- মেয়েরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় ধূমপান খুবই কম করে।তারপরেও মহিলারা যদি ধূমপান, মধ্যপান, অ্যালকোহল যেকোন মাদকদ্রব্য পান করে ।তাহলে বুকে ব্যাথা হওয়ার  সম্ভাবনা হতে পারে।
  • পানি শূন্যতা- মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা পুরুষদের তুলনায় মহিলারা অনেক পানি পান কম করে। আর পানি কম খেলে বা শরীরে পানি শূন্যতার কারণে বুকে জ্বালাপোড়া হতে পারে। শরীরে যদি পানি শূন্যতা হয় তাহলে শরীর অনেক সুস্ক হয়ে বুকে ব্যথা হতে পারে।
  • অন্যান্য সমস্যা- এগুলো ছাড়াও মহিলাদের অন্যান্য সমস্যা যেমন- অনিয়মিত পিরিয়ড, জীবন ধরনের প্রকৃতি, জেনেটিক, কিছু ঔষধ ইনফেকশন, গর্ভাবস্থায়, বাচ্চা প্রসবের সময় মহিলাদের বুকে ব্যথা হতে পারে।

মহিলাদের হৃদরোগ ছাড়াও যেসব কারণে বুক ব্যথা: 

মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জানতে এবং মেয়েদের হৃদরোগ ছাড়াও যেসব কারণে বুকে ব্যথা হয়। সেগুলো আমাদের জানা দরকার।আমাদের মধ্যে সব সময় অতি আতঙ্ক কাজ করে যে বুকে ব্যথা হলেই মনে হচ্ছে হৃদরোগের সমস্যা। আমাদের সকলের একটি ধারণা রয়েছে বুকে ব্যথা মানেই হচ্ছে হৃদরোগের লক্ষণ। 

তবে চিকিৎসকরা বলেন, সবাই এটা জেনে রাখা দরকার যে বুকে ব্যথা হলেই হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নয়। তাই টেনশন বা চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই।

  • আঘাত জনিত ব্যথা- অনেক সময় আমাদের বুকে পরিশ্রম বা কোন শক্ত কাজ করার সময় বা কোন কিছু শক্তি দিয়ে ভারী জিনিস উঠানো নামানো করার সময় বুকে চোট লেগে ব্যথা হয়। কোন ওষুধ সেবনের জন্য এমনকি ফুসফুসের সমস্যার জন্য বুকে ব্যথা হতে পারে ।এই ধরনের ব্যথা ক্ষণিকের অল্প সময়ের ব্যথা। 
  • খাবারের সমস্যা- অনেক সময় খাবারের সমস্যার কারণে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে ।এই ব্যথা বেশিক্ষণ থাকে না ।কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে খাদ্য গিলতে  অসুবিধা হলেও বুকে সমস্যা বা ব্যথা হতে পারে।
  • গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা- খাদ্য হজম সঠিক মত না হলে কোন কোন সময় এ্যাসিড আকার ধারণ করতে পারে।এই এ্যাসিড খাদ্যনালীতে  যাওয়ার ফলে বুক ও গলা জ্বালাপোড়া হতে পারে।
  • আতঙ্ক অথবা ভীতি- আমাদের মনের মধ্যে অনেক সময় আতঙ্ক হলে বা ভয় পেলে বুকের মধ্যে ধড়ফড় করে ওঠে ।তখন খুব ঘন ঘন নিশ্বাস নেওয়ার উপসর্গ হতে পারে। সেই সাথে শরীর ঘেমে যেতে পারে এবং তার জন্য বুকে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ব্যথার জন্য নাইট্রোগ্লিসারিন জাতীয় ঔষধ খেলে ব্যথা ভালো হয়ে যাবে।
  • আলসারের ব্যাথা -আমাদের দেহে যদি আলসার থাকে তাহলে বুকে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আলসার যদি ধরা পড়ে। তাহলে আলসারের চিকিৎসা করলে আলসার যদি ভালো হয়ে যায়। তখন বুকের ব্যথা আর থাকবে না।
  • এ্যাজমা জনিত ব্যথা- আপনার যদি শরীরে অ্যাজমা থাকে তাহলে বুকে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই চিকিৎসা করে অ্যাজমা ভালো করে ফেলতে হবে। এবং ভেজা বা স্যাঁতসেতে স্থানে অথবা ধুলো ,বালি, ছাই, নোংরা পরিবেশে থাকা দরকার নেই।
  • মানসিক চাপ- অনেক সময় মহিলারা প্রচন্ড মানসিক চাপে থাকেন। বিশেষ করে বিবাহ হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে মানসিক চাপ ,চিন্তা,ভাবনা, টেনশন ও ডিপ্রেশনের কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে। তাই এ সমস্ত বিষয় থেকে বেরিয়ে আসা দরকার।
  • নিউমোনিয়ার ব্যথা- নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে ফুসফুসে প্রদাহ হতে পারে। সে কারণে বুকে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নিউমোনিয়া হলে চিকিৎসা করে সেরে ফেলতে হবে।
  • বদ হজম- আমাদের বদহজমের কারণেও বুকে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ব্যথা সাধারণত অস্থায়ীভাবে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে। বেশি মসলা,চর্বিযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া,অতিরিক্ত বেশি খেলে বদহজমসহ বুকে ব্যথা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

মহিলাদের বুকে ব্যথা কি হৃদরোগের লক্ষণ ?

চিকিৎসকদের মতে, হৃদরোগের কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ রয়েছে যেগুলো দেখা দিলে সময় মতো চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের কিছু লক্ষণ আছে। এগুলো দেখা দিলে খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে।

আরো পড়ুন: মাথাব্যথার কারণ প্রতিকার চিকিৎসা ও এর ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন

মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি।সে সম্পর্কে জানতে আমার এই পোষ্টের সঙ্গেই থাকুন। মহিলাদের ও পুরুষদের ক্ষেত্রে আরো কিছু জটিল ধরনের ব্যথা রয়েছে যা হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের মত কঠিন রোগের সমস্যা হতে পারে। সেগুলো হল যেমন-

  • রক্ত সরবরাহ- হৃদযন্ত্র বা হাটে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী যদি বন্ধ হয়ে যায় এবং এর ফলে রক্ত যদি হাটে যেতে না পারে তাহলে হাটের মাংসপেশিতে প্রয়োজন মাফিক অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। তখনই বুকে ব্যথা হয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়।
  • বুকের মাঝখানে ব্যথা- হৃদরোগের বা হার্ট অ্যাটাকের প্রথম উপসর্গই হচ্ছে বুকে ব্যথা হবে। এই ব্যথা একেবারে বুকের মাঝখানে ব্যথা হবে। বুকের ডানে অথবা বামে ব্যথা হবে না।
  • হাত ও ঘাড় ব্যথা- হার্ট অ্যাটাকের আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে হাত ও ঘাড়ে ব্যথা। ব্যথা যখন ঘাড়ে ছড়িয়ে পড়বে তখন মনে হবে কেউ গলার মাংসপেশী চেপে ধরে বসে আছে।
  • পেটে তীব্র ব্যথা- বুকের প্রচন্ড ব্যথা পেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যথা কে অনেকেই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বলে থাকে। কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা পেতে হলে সেটি খুবই তীব্র ও জ্বালাপোড়া হবে।
  • কাশি ও শ্বাসকষ্ট- হৃদরোগের বা হাটের আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে শ্বাসকষ্ট শুরু হবে এবং তার সাথে কাশি হবে। হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা যদি সঠিক সময়ে না নেওয়া হয় তাহলে হাটে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে ফুসফুসে পানি জমে কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়।
  • শরীর ঘেমে  যাওয়া- বুক ব্যথার সাথে সাথে যদি শরীর প্রচন্ড ঘাম হয় তাহলে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেরি না করে জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।
  • অজ্ঞান হওয়া- বুকের ব্যথা অত্যন্ত তীব্র হলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। তখন বুঝতে হবে হাটের সমস্যা। এটাও হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষন।
  • বমি বমি ভাব- হঠাৎ বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব হলে তার সাথে যদি বুকে ব্যথা থাকে তাহলে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে।  

চিকিৎসকদের মতে,উল্লেখিত হার্ট অ্যাটাকের যেকোনো একটি লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগে  ভর্তি করতে হবে।  চিকিৎসকের মতে, হাসপাতালে নেওয়ার পর রোগীর রক্ত পাতলা করার জন্য ওষুধ দিতে হবে। সেই সাথে রক্তনালী হাটে 

সরবরাহ করে সেটিকে আরো প্রসারিত করার জন্য এক ধরনের ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে। এই চিকিৎসাটা বা ঔষধ দিলে রোগীর জীবন বেঁচে যেতে পারে।

মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি?

আমাদের জীবনে বুকে ব্যথা হচ্ছে একটি সাধারণ রোগ। মানুষের জীবনে কোন না কোন সময় বুকে ব্যথা কম বেশি হয়ে থাকে। যখন বুকের ব্যথা অস্বাভাবিক মনে হবে। তখন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে  প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

চিকিৎসকরা বলেছেন,যদি দেরি করেন তাহলে বড় ধরনের ঝুকির সম্ভাবনা থাকে। বুকের ব্যাথার কিছু কিছু কারণ হৃদরোগের ঝুঁকি হতে পারে ।বুকে ব্যথার গুরুত্ব না দিলে মৃত্যুর ঝুঁকি হতে পারে। যেমন-

  • হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে রোগীকে রেস্ট করতে হবে। শুয়ে বসে থাকতে হবে। হাঁটাচলা বা কোন কাজকর্ম করা যাবে না।
  • বুকে ব্যথা হলে একটা ইসিজি করা ভালো। কারণ হাতের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে তা জীবনের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। 
  • হঠাৎ বুকে ব্যথা বা হার্ট অ্যাটাক হয় তাহলে গোল্ডেন আওয়ার এর মধ্যে রোগী হাসপাতালে পৌঁছে গেলেই রোগীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
  • চিকিৎসকরা আরো বলেন, বুকের একদম মাঝখানে যদি ব্যথা হয় এবং আস্তে আস্তে দুই বাহু, ছোয়ালে ব্যথা করতে থাকে এবং শ্বাসকষ্টের মত সমস্যা যদি হয়।তাহলে হার্টের সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।
  • নারী-পুরুষ উভয়েরই যদি বুকে ব্যথা হয় তাহলে এ্যাসপিরিন বা ডিসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
  • যদি বুকে ব্যথা হয় তাহলে নাইটোগ্লিসারিন নামক একটি স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন।রোগী বসা অবস্থায় জিহবা উঁচু করে মুখের ভিতর স্প্রে করলে ব্যথা কমে যাবে। তবে সেই সাথে দ্রুত গতিতে চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে। 
  • চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার সাথে সাথে রোগীর খুব দ্রুত একটা পরীক্ষা করবেন। এরপর একটি ই সি জি করা হবে। তার সাথে টপোনিন ও রক্তে শর্করার পরীক্ষা করাতে পারেন। অবশ্য চিকিৎসকরাই এ সমস্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন। 
  • এটা জেনে রাখা ভালো যে বুকে ব্যথা হলেই যে হার্ট অ্যাটাকের মত সমস্যা হয়েছে তা নয়। এটা একটা উপসর্গ আর যদি গুরুতর ব্যথা হয়। এবং তা যদি না কমে তাহলে তখন মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।এবং তখন বুঝে নিতে হবে যে হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে। তখন হাসপাতালে এমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। 
  • একবার যদি হার্ট অ্যাটাক হয় তাহলে আবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তখন তার জীবন যাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত ভালোমতো ফলোআপ করতে হবে। বুকে ব্যথা হলে আতঙ্কিত হবেন না। শান্ত থাকতে হবে। শান্ত থাকলে বুকে ব্যথার সঙ্গে মোকাবেলা করতে সুবিধা হবে।
  • তৈলাক্ত খাবার বা চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। অথবা যেসব খাবার খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা বেড়ে যায় সেগুলো খাওয়া বাদ দিতে হবে।
  • যদি আলসারের কারণে বুকে ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আলসার যদি ধরা পড়ে তাহলে আলসারের চিকিৎসা করলে আলসার ভালো হয়ে গেলে বুকের ব্যথাও ভালো হয়ে যাবে।
  • এ্যাজমা জনিত কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে। সেজন্য ভেজা বা স্যাঁতসেতে নোংরা পরিবেশ ও  কল কারখানার ধোঁয়া স্থানে বসবাস করা থেকে বিরত থাকুন।
  • কি কি কারনে বা কি জন্য আপনার বুকে ব্যথা হচ্ছে তা যদি আপনি নির্ণয় করতে না পারেন বা জানতে না পারেন। তাহলে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট যেতে পারেন।
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম, আঘাত লাগা, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত চিন্তা, ভাবনা টেনশন, ডিপ্রেশনের কারণে যদি বুকে ব্যথা হয়। তাহলে এই সমস্ত বিষয়গুলো থেকে আপনাকে বা আমাদেরকে বেরিয়ে আসা উচিত।এবং একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট থেকে পরামর্শ নেওয়া দরকার।

মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথার ঘরোয়া উপায়:

মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে উপরে আলোচনা করেছি। এখন মেয়েদের বুকে হালকা ব্যথা বা অল্প অল্প ব্যথা অথবা সাধারণ কোনো ব্যথা হলে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করলে এ ধরনের ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। তবে এই উপায় গুলো ব্যবহার বা অবলম্বন করার আগে একজন 

অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এগুলো খাওয়া বা ব্যবহার করা উচিত। শুধু মেয়ে নয় পুরুষরাও এই উপায় গুলো অবলম্বন করলে বুকের ব্যথা কমে যেতে পারে।কিছু ঘরোয়া উপায় নিম্নে উল্লেখ করলাম--

এই ঘরোয়া উপায় গুলো হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের মত বুকের মারাত্মক ব্যাথার কাজ করতে পারে না।তবে বুকের ব্যথা যদি হালকা বা নরমাল হয়ে থাকে। তাহলে ঘরোয়া উপায়গুলো বুকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। 

  • তুলসী গাছ -তুলসী পাতা বা তুলসী গাছের বেশ কিছু রোগের ঔষধি গুন রয়েছে। তাজা তুলসী পাতা থেকে রস বের করে পান করলে বুকের সামান্য ব্যথা বা হৃদযন্ত্রের ব্যথা কমে যেতে পারে।
  • অ্যালোভেরা -অ্যালোভেরা হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে এবং বুকে হালকা ব্যথা থাকলে সেই ব্যথা কমিয়ে দিবে ।এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে এক চামচ অ্যালোভেরার রস নিয়মিত খেলে খেলে বুকের জন্য উপকার হবে।
  • ডালিম- ডালিম এ রয়েছে খনিজ এবং ভিটামিন যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং বুকের হালকা ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ডালিম খেলে বুকের ব্যথা কমে যেতে পারে।
  • আদা- আদায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। আদা চায়ের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে। আলাদা টুকরো টুকরো করে অল্প অল্প করে নিয়মিতভাবে আদা খেলে বুকের ব্যথা কমে যেতে পারে।
  • হলুদ-বুকের ব্যথা প্রতিরোধে হলুদ দারুন কাজ করে এবং বুকের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। হলুদ এক  গ্লাস হালকা কুসুম গরম দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে বুকের ব্যথা কমিয়ে যেতে পারে। সেই সাথে আপনি অনেক আরাম পাবেন।
  • রসুন - রসুন হচ্ছে বুকে ব্যথা নিরাময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া উপায়। রসুনের ব্যবহার হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং বুকের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।
  • বাদাম- বাদাম গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত দিনে কয়েকটা বাদাম খাওয়া তার সাথে এক কাপ দুধ পান করলে বুকে এ্যাসিডিটি কমে যেতে পারে এবং সেই সাথে বুকের হালকা ব্যথা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • ব্রেকিং সোডা- হালকা কুসুম কুসুম গরম পানির সঙ্গে ব্রেকিং সোডা মিশিয়ে পান করলে পাকস্থলীর এ্যাসিডের সমস্যা কমিয়ে দেয় এবং সেই সাথে বুকের হালকা ব্যথা কমে যেতে পারে।
  • আপেল সিডার ভিনেগার- এটি এ্যাসিডের সমস্যা দূর করতে দারুন ভূমিকা রাখে।  অ্যাসিড এর কারণে বুকে ব্যথা হলে আপেল সিডার ভিনেগার এর মাধ্যমে এসিডের সমস্যা ভালো হয়ে গেলে বুকের ব্যথাও কমে যেতে পারে।
  • মাদকদ্রব্য- ধূমপান,মদ্যপান, অ্যালকোহল , ফেনসিডিল, গাঁজা হিরোইন ইত্যাদি যেকোন মাদকদ্রব্য নেশা পরিহার করতে হবে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে বুকের হালকা ব্যথা সহ শরীরের অন্যান্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই বুকের হালকা ব্যথা কমাতে বা অন্যান্য রোগের প্রতিরোধের জন্য প্রচুর পরিমাণ আমাদের পানি খাওয়া উচিত।

আপনার যদি বুকে হালকা ব্যথা থাকে তাহলে উল্লেখিত বুকে ব্যথা দূরীকরণের ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে চলার আগে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

উপসংহার-মেয়েদের বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয়: 

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, বুকের ব্যথা সম্পর্কে উপরে আলোচনার মাধ্যমে এটাই বোঝা যায় যে বুকের ব্যথা নারী-পুরুষ কোন খুব একটা ভেদাভেদ নাই। যে ব্যথা পুরুষের হয় সেই ব্যথা মেয়েদেরও হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েদের বুকের ব্যথা পার্থক্য আছে সেটা পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন।এবং এটা সব সময় স্মরণ রাখবেন যে বুকের ব্যথা মানেই হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ নয়।

আরো পড়ুন: এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায় সমূহ জেনে নিন

তাই কোন চিন্তা, ভাবনা,টেনশন না করে উল্লেখিত ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করার সাথে সাথে আপনি একজন অভিজ্ঞ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।পোস্টটি অন্যান্য ব্যক্তিদের কাছে শেয়ার করে দিবেন। যেন তারাও পোস্ট টি করে উপকৃত হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url