বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে - বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া
পোষ্ট সূচিপত্রঃ বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে - বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া
- বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে
- বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া
- বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
- বজ্রপাতের সময় কি করা উচিত নয়
- উপসংহার
বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে
আজ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদের সঙ্গে বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে সে বিস্তারিত আলোচনা করব। বছরের শুরুতে প্রথমে বজ্রঝড় ও বজ্রপাত নিয়ে আসে বজ্রপাতের জন্য মানুষের জীবনসহ জালমাল, গবাদি পশু, পাখির, অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। মহান আল্লাহ তা আলার পবিত্র কুরআনে বজ্রপাতের সম্পর্কে সুন্দরভাবে কথা বলেছেন। বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বজ্রপাত, বজ্রঝড়, মেঘ, বৃষ্টি এসব আল্লাহ সৃষ্টি। আল্লাহর দেওয়া মেঘ, বৃষ্টি, বজ্রঝড়, ঝড় এইসব প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখে গাছপালা পশুপাখি ও মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করে এবং বজ্রপাত দিয়ে খারাপ মানুষদের শাস্তি দেন ও ধ্বংস করেন একথা পবিত্র আল-কোরআনে বলা হয়েছে। মহান সৃষ্টিকর্তা পালনকর্তা চাইলে মানুষকে ধ্বংস করতে পারবেন, আবার কাউকে রক্ষা করলে কেউ মারতে পারবে না এবং কাউকে মারতে চাইলে কেউ রক্ষা করতে পারবেনা।
বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো হাদিস কোরআনের বর্ণনায় এ কথাটা পরিষ্কার ও সত্যি যে বজ্রপাত মহান আল্লাহতালার পক্ষ থেকে এক মহা দুর্যোগ। আল্লাহ প্রদত্ত এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বেঁচে থাকতে হলে পবিত্র কোরআন হাদিসের কোন বিকল্প নেই এবং বজ্রপাত থেকে বাঁচতে হলে মহান আল্লাহতালার কাছ থেকে ক্ষমা চাইতে এবং দোয়া করতে বলেছেন ।
আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আকাশে মেঘ দেখলে চিন্তিত হতেন এবং বৃষ্টি হওয়ার পরে তিনি দোয়া করতেন এজন্য আমাদের সবাইকে আকাশে মেঘ, বৃষ্টি, বজ্র ঝড় বা বজ্রপাত হলে দোয়া পড়া উচিত। বজ্রপাতে মৃত্যু এ বিষয়ে ইসলামে কোন সুনির্দিষ্ট হাদিস নেই বজ্রপাতের মৃত্যু একটি সাধারণ মৃত্যুর মধ্যেই পড়ে। এটাকে শহীদি মৃত্যু বা অভিশপ্ত মৃত্যু এর কোনটাই বলা যাবে না এ কথাগুলো কুসংস্কার ছাড়া আর অন্য কিছু নয়।
বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া
আজ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদের সঙ্গে বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়, বজ্রঝড় এগুলো আল্লাহর সৃষ্টি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। পবিত্র কোরআন হাদিসে বর্ণনা একথা ক্লিয়ার ভাবে বলা হয়েছে মহান আল্লাহতালার পক্ষ থেকে বজ্রঝড় হয়। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আল্লাহর সৃষ্টি এসব বজ্রঝড় থেকে রক্ষা পেতে হলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে ও দোয়া চাইতে হবে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আকাশে মেঘ দেখলে চিন্তিত হয়ে পড়তেন এবং এদিক-ওদিক তাকিয়ে থাকতেন বৃষ্টি হলে তিনি দোয়া করতেন ঝড় বৃষ্টির সময় সব মমিন ব্যক্তিদেরই দোয়া পড়া উচিত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহ বলেছেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন একটি দোয়া পড়তেন।
আরো পড়ুনঃ ৯ উপায়ে কিভবে সুন্দর হওয়া যায় - রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায়
বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া বর্ণনা করা হলো আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা, ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা। অর্থ হলো যে হে আল্লাহ আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দিবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না এসবের আগে আপনি আমাকে পরিত্রান দিন।
যে ব্যক্তি বজ্রপাতের আওয়াজ শুনে এই দোয়া পড়বে সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি সে বজ্রপাতের আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। মহান আল্লাহ যেন আমাদের বজ্রপাত থেকে রক্ষা করে এবং বজ্রপাতের কল্যাণ সম্পর্কে জ্ঞান দান করেন আমিন। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয়ই বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া এবং তার অর্থ জানতে পেরেছেন।
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
আজ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদের সঙ্গে বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। মহান আল্লাহতালা ঝড়, বৃষ্টি, মেঘ এসব সৃষ্টি করেছেন এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখেছেন পশু, পাখি, গাছপালা, মানুষ সবার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ চাইলে বজ্রপাতের মাধ্যমে মানুষের ক্ষতি ও ধ্বংস করতে পারেন। বজ্রপাতের কারণে মানুষের, পশুপাখির, গাছপালার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে।
আসুন তাহলে বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করি। বজ্রপাত থেকে বাঁচতে হলে বজ্রপাতের সময় দালান বা পাকা ছাদের নিচে আশ্রয় নিন, ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে খোলা স্থানে বা ফাঁকা জায়গায় থাকা যাবে না, উঁচু গাছপালা এবং বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকতে হবে, বজ্রপাতের সময় জানালা থেকে দূরে থাকতে হবে, বজ্রপাতের সময় জানলা বন্ধ করে রাখবেন, বজ্রপাতের সময় ধাতব বস্তু স্পর্শ করবেন না।
আরো পড়ুনঃ এ আধুনিক যুগে বিয়ের বয়সসীমা কত হওয়া উচিৎ
বজ্রপাতের সময় সিঁড়ি রেলিং, পাইপ, পানির কল এসব সংস্পর্শে থাকবেন না, ইলেকট্রিক লাইন, টিভি, ফ্রিজ, টেলিফোন এসব স্পর্শ করবেন না, বজ্রপাতে আওয়াজ পেলে আগেই টিভি, ফ্রিজ, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের লাইন বন্ধ করে দিবেন এবং বন্ধ করা থাকলেও এগুলো স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে বা ধান খেতে থাকলে নিচু হয়ে যান এবং বাড়ির ছাদে থাকলে তাড়াতাড়ি সেখান থেকে সরে জান।
বজ্রপাতের সময় পুকুরে গোসল করলে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি সরে যান পানিতে বিদ্যুৎ খুব তাড়াতাড়ি স্পর্শ করে। বজ্রপাতের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন কোন ব্যক্তি বজ্রপাতে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন সম্ভব হলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনি অবশ্যই বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায় কি সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।
বজ্রপাতের সময় কি করা উচিত নয়
আজ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদের সঙ্গে বজ্রপাতের সময় কি করা উচিত নয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। প্রতিবছরে বজ্রপাতের কারণে বেশিরভাগ মানুষ মারা যায় তাই বজ্রপাত থেকে বাঁচতে হলে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে আসুন তাহলে বজ্রপাতের সময় কি করা উচিত নয় সে সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক লাইন, টিভি, ফ্রিজ এসব বন্ধ করা থাকলেও হাত দেওয়া যাবে না।
আরো পড়ুনঃ শিশুর জ্বর হলে করণীয় - শিশুর জ্বর কমানোর ২০ উপায়
পুকুরে গোসল করলে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি সরে যেতে হবে। গাড়ির মধ্যে থাকলে গাড়িটি একটি নিরাপদ স্থানে দাঁড় করাতে হবে এবং গাড়ির কোনো যন্ত্রপাতিতে হাত দেওয়া যাবেনা। বজ্রপাতের সময় জানালার পাশে বা ছাদে থাকলে সেখান থেকে দ্রুত সরে যেতে হবে। জানালার গ্রিল ধরে বা সিঁড়ির রেলিং ধরে বজ্রপাতের সময় দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয়ই বজ্রপাতের সময় কি করা উচিত নয় এবং বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে সে বিষয়ে জানতে পেরেছেন।
উপসংহার
পরিশেষে এ কথা বলে শেষ করব যে আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে বজ্রপাতে মৃত্যু ইসলাম কি বলে এবং বজ্রপাত সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আশা করি আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন এবং আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ।24079
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url