হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব জানুন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি জানেন হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব? আপনি যদি না জেনে থাকেন যে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব তাহলে আমার এই আর্টিকেলটি পড়ুন। অনেক মানুষ জানে না যে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব।
আসুন তাহলে শুরু করা যাক হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব তা বিস্তারিত আলোচনা করি।
ডায়াবেটিস নিরসনে হোমিও ঔষধ:
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব এর সাথে ডায়াবেটিসের হোমিও ঔষধ কি কি রয়েছে তাও আমাদের জানা দরকার।ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সহজেই পুরোপুরি ভালো হয় না এবং এই রোগ নিরব ঘাতকের মত দিন দিন বেড়েই চলেছে।অনেক সময় কারো কারো ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে অন্যান্য মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয় বা হচ্ছে।
আরো পড়ুন: হাঁটু ব্যথার কারণ কি কি এবং এর প্রতিকার করার উপায় সমূহ জানুন
ড়ুনযেমন-হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা, লিভার সমস্যা ইত্যাদি জটিল রোগের সৃষ্টি হয়ে তাড়াতাড়ি রোগীর মৃত্যু হতে পারে।তাই আপনার যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তাহলে নিম্নে উল্লেখিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বা হোমিও ওষুধগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যবহার করতে পারে ন।
আমাদের দেশে অনেকের মধ্যে একটি ধারণা আছে যে হোমিও চিকিৎসা বা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ধীরে ধীরে কাজ করে ডায়াবেটিসের জন্য যে ওষুধ বা চিকিৎসা বা প্রতিকার রয়েছে তা হলো ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য সমস্ত শরীরের কি ধরনের লক্ষণ আছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করে তারপর হোমিও ঔষধ ডাক্তাররা সরবরাহ করে থাকেন।
সিজিগিয়াম জাম্বোলেনাম-প্রচুর পানির পিপাসা, শরীরে ঘা,ঘন ঘন প্রস্রাব,শরীর দুর্বল ইত্যাদি হলে চিকিৎসকরা এই ওষুধটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ব্যবহার করার জন্য অনুমতি দেন। কনিয়াম ক্যালেন্ডুলা, আসেনিকাম,অ্যালবাম,অরামমেট, লাইকোপডিয়াম,মেডেরিয়াম, ফসফরাস,
ইউরেনিয়াম,নাইট্রিকাম, নাক্স ইত্যাদি হোমিও ঔষধগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। নিজ ইচ্ছায় এই ধরনের ওষুধ খাওয়া যাবেনা। হোমিও চিকিৎসক যে নিয়মে বা আপনার ডায়াবেটিসের ধরন বা মাত্রা কত। তার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসক আপনাকে ঔষধ ব্যবহার করতে বলবেন।
তবেই ওই ডাক্তারের নিয়ম অনুসারে এই ঔষধ ব্যবহার করবেন। এছাড়া আরো হোমিও ঔষধ যেমন- অ্যাব্রোমা অগাস্টা,RHUS অ্যারোমেটিকা,ফসফরিক অ্যাসিড কিউ, ইনসুলিন ২০০, Alloxan200 ইত্যাদি।
অ্যাব্রোমা অগাস্টা কিউ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে:
এই ঔষধটি ডায়াবেটিসের অনেক ভালো কাজ করে।ডায়াবেটিস হলে অতিরিক্ত তৃষ্ণা, ক্ষুধা বৃদ্ধি,ঘন ঘন প্রস্রাব। এই সমস্ত ডায়াবেটিস মিলিটাসের কারণে মাংসের ক্ষয় এবং কঠিন দুর্বলতার জন্য এই ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই আপনার যদি ডায়াবেটিস মাত্রা বেশি হয়ে থাকে তাহলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এর নিকট যোগাযোগ করে এই ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন।
ফসফরাস২০০ ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী:
এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসের মাত্রা বেশি হলে রোগীর দৃষ্টিশক্তিতে ঝাপসা চলে আসে।অর্থাৎ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ঘটলে রক্তনালীর ক্ষতি করে। যার ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়। এই দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা রোধ করার জন্য ফসফরাস ২০০ ব্যাপক ভূমিকা পালন করে এবং ফসফরাস ২০০ দৃষ্টি শক্তির দুর্বলতার উপকার করে থাকে।
সিজিয়াম জাম্বোলালুম ঔষধ ডায়াবেটিসের জন্য কার্যকর:
এই হোমিওপ্যাথিক ঔষধটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে দেয়। অত্যন্ত তৃষ্ণা, অত্যাধিক প্রস্রাব এবং দীর্ঘমেয়াদী ডায়াবেটিস আলসারের চিকিৎসায় অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস রোগীদের মুখের ঘা, কাটা, ফোসকা,ফাটল ইত্যাদি ঘা এর কাজ করে।এই ধরনের সমস্যা থাকলে আপনি এটা ব্যবহার করতে পারেন।তবে চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে ব্যবহার করবেন।
হোমিও ঔষধ ফসফরিক এসিড ডায়াবেটিসের কাজ করে:
ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি অনেক সময় পায়ের স্নায়ুগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।যার ফলে পায়ে বা হাতে অসারতা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা দূরীকরণে ফসফরিকএসিড হলো সেরা হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার।
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ জিমনেমা সিলভেস্টেরে:
ডায়াবেটিসে দুর্বলতা ও ক্লান্তির সাথে ওজন কমাতে পারে।এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে এই হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার একটি টনিক হিসেবে কাজ করে। যার কারণে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। এটি ব্যবহারে ডায়াবেটিস রোগী উদ্যোমি ও ওজন বেড়ে যায়।
হোমিও ইনসুলিনাম ২০০ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে:
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব তা আরো জানুন।ইনসুলিয়াম ২০০ এই ওষুধটি অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ কে উৎসাহিত করে টাইপ1 ডায়াবেটিসের জন্য দারুন কাজ করে। হোমিও চিকিৎসকদের মতে,এই ঔষধটি ধীরে ধীরে কাজ করলেও এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইনসুলিন নির্ভরতা কম করে।
এবং এর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং এটি নিরাপদ। এছাড়াও ডায়াবেটিস জনিত ত্বকের সমস্যা যেমন- ফোঁড়া ,এ্যাকজিমা ইত্যাদি বন্ধ করতে এই ওষুধটি কাজ করে।
Allaxan200 হোমিও ঔষধ ডায়াবেটিসের উপকার করে:
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের মতে,Allaxan200 হচ্ছে একটি খুব ভালো হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার যা মেটফরমিন এর মতোই ফলাফল দেয় এবং এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। এর কর্ম ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস অগ্নাশয়ের অপ্রতুলতা, গ্লাইকোসুরিয়া এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া জড়িত।
তাই আপনার যদি ডায়াবেটিসের গ্লোকোজের মাত্রা ১৬ পয়েন্টের উপরে থাকে বা কোন অসুবিধা মনে করে থাকেন তাহলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে আপনি হোমিও ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে উপরে উল্লেখিত ঔষধ গুলো ব্যবহার করতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কিছু ব্যায়াম:
আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে উল্লেখিত হোমিও ঔষধ গুলো ব্যবহার করতে পারেন।এখন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের কিছু ব্যায়াম নিয়ে আলোচনা করবো ।শরীর যদি সচল রাখা হয় তাহলে আপনার রক্তে সুগারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে বা কন্ট্রোলে থাকতে পারে। যেমন দ্রুত হাঁটা বা দৌড়ানো, বাইসাইকেল চালানো,সাঁতার কাটা, সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করা,ফুটবল খেলা, ক্রিকেট খেলা ।
আরো পড়ুন : কোমরের ডান পাশে ব্যথা কেন হয় তার করণীয় কি
ইত্যাদি ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিসের সুগারের পরিমাণ কন্ট্রোলে থাকবে। তবে খালি পেটে কখনোই ব্যায়াম করবেন না।ব্যায়াম শুরু করার আগে কিছু খেয়ে তারপরে ব্যায়াম শুরু করবেন। নইলে আরো ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিসের ধরন বা মাত্রার উপর নির্ভর করে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কিছু খাবার:
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব তা উপরের অংশে আলোচনা করেছি। হয়তো আপনি কিছুটা জানতে পেরেছেন যে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ কাজে লাগে। এখন আমি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করবো।আশা করছি আমার এই পোস্টের সঙ্গেই থাকবেন।
কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস পুরোপুরি ভালো হবে না তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যেমন-প্রতিদিন একই রকমের খাবার না খেয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে হবে, লাল চালের ভাত ,লাল আটার রুটি ইত্যাদি সময়মতো খাবার খেতে হবে। সকালের নাস্তা দুপুরের ও রাতের খাবার ঠিক সময় খেতে হবে।
ফল-মূল ও শাকসবজি, প্রোটিন খাবার যেমন- কুসুম ছাড়া ডিম, মাছ, শীম, টক দই ,পনির এছাড়া ডায়াবেটিস রোগীরা কি ধরনের ফল খেতে পারেন যেমন- বাঙ্গি, জাম্বুরা, ইত্যাদি। এছাড়া শসা, বেগুন, টমেটো ও সবুজ শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।বাদাম, মটর দানা এই সকল আঁশ জাতীয় খাবার খেতে হবে।
যদি আপনি চা খান বা কফি খান তাহলে তিনি ছাড়া হারবাল খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন। মুরগির মাংস, কোয়েল পাখির মাংস, কবুতরের মাংস খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ গ্রাম কাঁচা পেঁয়াজ খান কারণ কাঁচা পেঁয়াজে হজমে ও ডায়াবেটিসের জন্য মূত্র-বর্ধক ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
লেখক এর শেষ কথা:
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী মুক্তি কিভাবে সম্ভব এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কিছু খাবার এবং কিছু ব্যায়াম এর পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি।আসলে ডায়াবেটিস পুরোপুরি ভালো হয় না যত প্রকার ভালো বা উন্নত চিকিৎসা বা ঔষধ ব্যবহার করেন না কেন ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা পুরোপুরি কখনোই ভালো হয় না।
তবে ঔষুধের মাধ্যমে,চিকিৎসার মাধ্যমে, খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে, ডাক্তারের নিয়ম মানার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। আশা করছি আমার এই পোস্টটি পড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে কি করলে সুগার বা গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা আপনি জানতে পেরেছেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url