কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় -তার উপায় সমূহ কি কি জানুন
আপনি কি মোটা হতে চান? কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় তার উপায় কি কি আপনি কি জানতে চান ? আজ আমি এই পোস্টে আলোচনা করব কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় সমূহ কি কি।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় সমূহ।
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় সমূহ:
অনেকেই আছে যারা মোটা হওয়ার জন্য চেষ্টা করেও মোটা হয় না। আসলে খুব মোটা স্বাস্থ্য ভালো না। আবার খুব চিকন স্বাস্থ্যও ভালো না। শরীর স্বাভাবিক থাকলেই ভালো। চিকন স্বাস্থ্য মোটা করার জন্য বেশি বেশি করে খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন-গরু, ছাগলের মাংস,ঘি, মাখন ,ডিম, কোমল পানীয় খেজুর, চকলেট ইত্যাদি।
আরো পড়ুন : ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে জানেন
পড়ুনএই ধরনের খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে। প্রতিদিন ক্যালরি যুক্ত খাবার খেলে দেহ মোটা হতে পারে। সময় মতো ঘুমাতে হবে। কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। কমপক্ষে 8 থেকে 10 ঘন্টা না ঘুমালে শরীর ঠিক থাকে না। তবে শরীরে যদি কোন অসুখ থাকে তাহলে আগে শরীর সুস্থ করে তারপর ভাত তিনবেলা খেলে আপনি মোটা হতে পারবেন।
এছাড়া মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিন ফলমূল, শাকসবজি, আলু, দুধ, মধু, ড্রাই ফ্রুটস, ছোলা,ফাস্ট ফুড, ভুনা খিচুড়ি ইত্যাদি খেতে পারেন। মোটকথা আপনি যদি ক্যালরি যুক্ত খাবার খান তাহলে সহজেই মোটা হবেন। তবে স্বাভাবিক এর তুলনায় ভাত ও পানির পরিমাণ প্রতিদিন বেশি খেলে আপনি মোটা হতে পারবেন।
আবার অতিরিক্ত কোন কিছুই খাওয়া ঠিক হবে না। অতিরিক্ত খেলে নানা ধরনের অসুখ হতে পারে। এছাড়া আপনি কোন টেনশন করবেন না। টেনশন করলে মোটা হওয়া তো দূরের কথা আরো রোগী বা চিকন হয়ে যাবেন।
মোটা হওয়ার জন্য শুকনো ফলমূল:
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় ও তার উপায় কি কি এর মধ্যে শুকনো ফলমূল তাড়াতাড়ি শরীর কে মোটা করার জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে।এই শুকনো ফল মূলে ক্যালোরির মাত্রা বেশি থাকে। যেমন- কাজুবাদাম, কিসমিস, খেজুর এগুলো নিয়মিত খেলে তাড়াতাড়ি আমাদের শরীর তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে।
যদি দিনে কমপক্ষে তিনবার এগুলো খাওয়া যায় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি শরীর মোটা হয়ে যেতে পারে।
শরীর মোটা করতে পিনাট বাটার:
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় সমূহ কি কি এগুলোর মধ্যে পিনাট বাটার খুবই কার্যকর। পিনাট বাটারি আছে উচ্চ ক্যালোরি তাই আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত পাউরুটির সঙ্গে একবার করে খেলে আপনি মোটা হতে পারবেন। পিনাট বাটার বিস্কুট বা রুটি ছাড়াও শুধুমাত্র পিনাট বাটার খেলেও ওজন বাড়বে।
তাই আপনার শরীর যদি অত্যন্ত পাতলা বা চিকন হয়ে থাকে। তাহলে পিনাট বাটার খেয়ে দেখতে পারেন। অথবা অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন কিভাবে আপনার শরীর কে মোটা করা যায়।
আলু মোটা হওয়ার জন্য কার্যকরী :
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় সমূহ কি কি এগুলোর মধ্যে আলু একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। দৈনন্দিন জীবনে আমরা আলু খেয়ে থাকি কিন্তু অনেকেই আমরা জানি না যে আলু খেলে ওজন বাড়ে কিনা অথবা শরীর মোটা হয় কিনা। আলুতে আছে কার্বোহাইড্রেট ও সুগার।
তাই এই উপাদান ওজন বাড়াতে ভালোভাবে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুবার করে খাবারের পাতে সেদ্ধ আলু খেলে শরীর মোটা হতে পারে। এছাড়া আলুর তৈরি চিপস জলপাই তেলে ভেজে সংরক্ষণ করে খাওয়া যেতে পারে। দুই থেকে তিন মাস নিয়মিত আলু খেলে কিছুটা হলেও আপনি মোটা হতে পারবেন।
ডিম খেলে মোটা হওয়া যায়:
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় তার উপায় কি কি তা জানতে আমার এই পোস্টের বা আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকুন। মোটা হওয়ার জন্য ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার ।এতে চর্বি প্রোটিন ও ক্যালোরি আছে। যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই ওজন বাড়াতে চাইলে নিয়মিত ডিম খেতে পারেন।
আরো পড়ুন: হাঁটু ব্যথার কারণ কি কি এবং এর প্রতিকার করার উপায় সমূহ
তবে ডিমের সাদা অংশ খেতে হবে কারণ ডিমের কুসুমের মধ্যে নানা ধরনের ক্ষতিকর দিক থাকে। কুসুম খেলে শরীরের অন্যান্য ক্ষতি হতে পারে। তাই অন্তত প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টি ডিম কুসুম ছাড়া খেলে তিন মাসের মধ্যেই আপনি ফলাফল পেয়ে যাবেন।
দুধ ওজন বাড়াতে সাহায্য করে:
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় গুলো কি কি সেগুলোর মধ্যে দুধ একটি খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান। অতিরিক্ত ওজন হলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। অপরদিকে স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম হলেও সংকার কারণ হতে পারে। প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদানই দুধে রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য জন্য খুবই উপকারী ।
দুধে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি- ১২ । ক্যালসিয়াম হাড়ের ও দাঁত মজবুত রাখতে সহায়তা করে আর ভিটামিন বি- ১২ রক্ত তৈরিতে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়তা করে। ওজন বৃদ্ধি বা স্বাস্থ্য মোটা করার জন্য সকালের নাস্তার পাশাপাশি দুপুরে বা রাতে যে কোন খাবারের সাথে দুধ খাওয়া যেতে পারে।
ছোট বাচ্চা অবস্থায় নিয়মিত দুধ পান করলে তাড়াতাড়ি শিশুর শরীর বৃদ্ধির উন্নতি ঘটে বা মোটা হবে এবং অন্যান্য রোগ কম হবে।
কলা শরীর মোটা বা ওজন বাড়ায়:
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং তার উপায় কি কি তা হয়তো আপনি এতক্ষণে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। কলা হচ্ছে ওজন বা শরীর মোটা করার একটি আদর্শ ফল। এই ফল বছরের সব সময় পাওয়া যায়। কলাতে আছে ভিটামিন বি-৬ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজ করে।
কলাতে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার রয়েছে যা হজমে সাহায্য করে এবং হার্টের রোগের জন্য বিশেষ উপকারী। মানবদেহে যদি কোন রোগ থাকে তাহলে তার স্বাস্থ্য বাড়ে না বরং আরো স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় বা চিকন বা শরীর পাতলা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কলা যেহেতু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেজন্য আমরা বলতে পারি কলা খেলেও মোটা হওয়া যায়।
বাদাম ওজন বাড়াতে কাজ করে:
ওজন বা শরীর মোটা করার জন্য বাদাম ভালো কাজ করে। বিভিন্ন প্রকার বাদাম যেমন-চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম ,কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম ইত্যাদি যেকোনো ধরনের বাদাম খাওয়া যেতে পারে ওজন বাড়ানোর জন্য। বাদামের মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে, অনেক রকমের মিনারেল, ভিটামিন,ফাইবার আছে।
তাই ওজন বাড়ানোর জন্য নাস্তার সাথে কয়েকটি বাদাম খাওয়া যেতে পারে। ওজন বাড়ানোর জন্য দুপুরে রাতে খাবারের পরে বাদাম খাওয়া উপকারী।
ব্যায়াম শরীরকে মোটা করে:
কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এইজন্য কি ধরনের ব্যায়াম করলে মোটা হওয়া সম্ভব তা আমাদের জানা দরকার। চলুন তাহলে জেনে নেই মোটা হওয়ার জন্য কি ধরনের ব্যায়াম করা দরকার। অনেকেই জানে যে চিকন বা পাতলা স্বাস্থ্য থেকে শরীর মোটা করার জন্য ব্যায়াম আছে। আসলে তা কিন্তু ঠিক নয়।
শরীর মোটা করার জন্যও কিছু আলাদা ব্যায়াম আছে।যেমন- স্কোয়াটস, ডেডলিস্ট, বেঞ্চ প্রেস, ওভারহেড প্রেস, পুল আপস ইত্যাদি। এই সমস্ত ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করতে পারলে শরীরকে মোটা করা সম্ভব হতে পারে।তবে এই ব্যায়ামগুলো কিভাবে করতে হয় হয়তো আমরা অনেকেই নাও জানতে পারি।
তাই অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা এই সমস্ত ব্যায়াম গুলো করলে সঠিকভাবে ব্যায়ামগুলো করা যাবে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে।
মোটা হওয়ার জন্য চিকিৎসা বা ঔষধ:
আসলে স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য কোন ঔষধ তেমন নেই। তবে কিছু কিছু ভিটামিন ঔষধ আছে যা খেলে আপনি হয়তো কিছুটা মোটা হতে পারেন।এগুলোর মধ্যে জিংক,ক্যালডি-৩, বিকোজেন, প্রটামোইন ইত্যাদি খেতে পারেন। আসলে একজন মানুষের উচ্চতার উপর ভিত্তি করে কতটুকু ওজন হওয়া উচিত।
আরো পড়ুন: কোমর ব্যথা কি কিডনি রোগের লক্ষণ ? সবারই জানা দরকার
তা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মোটা হওয়ার ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। দেহের উচ্চতার তুলনায় আপনার ওজন বা শরীর মোটা যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে নানা ধরনের অসুখ হতে পারে।
উপসংহার-কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায়:
প্রিয় পাঠক, আপনি হয়তো পুরো পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে কিভাবে তাড়াতাড়ি মোটা হওয়া যায় এবং মোটা হওয়ার উপায় সমূহ কি কি। কারণ এর সবগুলোই আমি এই আর্টিকেলে উল্লেখ করেছি। যদি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি কোন উপকার পেয়ে থাকেন তাহলে আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি।
আসলে মোটা হওয়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে চলায় ভালো। কারণ শরীরের বা দেহের উচ্চতার উপর ভিত্তি করে আপনার শরীর কতখানি মোটা করা দরকার সেই অনুসারে চিকিৎসক আপনাকে পরামর্শ দিবেন। দেহের উচ্চতা এবং গঠন প্রণালীর তুলনায় স্বাস্থ্য যদি অনেক বা অতিরিক্ত মোটা হয় তাহলে শরীরে অন্যান্য রোগের সৃষ্টি হতে পারে।
তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শরীর মোটা করার জন্য অগ্রসর হওয়া উচিত।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url