ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে জানুন

প্রিয় পাঠক আপনি কি ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকতে পারেন। অনেকেই ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে জানতে চায়। তাই আজ আমি ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে আলোচনা করবো ।

আসুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাকডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি। 

ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি:

 বিশ্বের প্রতি দিনই ডায়াবেটিসের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা পুরোপুরি কখনোই ভালো হয় না। যত প্রকার উন্নত মানের চিকিৎসা আছে তার সবগুলো চিকিৎসা নিলেও ১০০% এই রোগ কখনোই সারে না। তবে নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

আরো পড়ুন: মহিলাদের হাঁটু ব্যথার কারণ কি কি এবং এর প্রতিকার সমূহ জানেন

এই রোগ বিভিন্ন ইনসুলিন ব্যবহার করলে বা কিছু ব্যায়াম করলে, কিছু বিধি-নিষেধ খাবার আছে এগুলো না খেলে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটা তালিকা আছে বা চাট এই তালিকা ভালোভাবে ফলোআপ করলে বা মেনে চললে ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। কিন্তু পুরোপুরি ভালো হবে না ।বর্তমানে চিকিৎসার অনেক পরিবর্তন হয়েছে আগে সালফোনাইল ইউরিয়া নামক ওষুধ ছিল।

বর্তমানে তা খুব একটা ব্যবহার হচ্ছে না। নতুন ওষুধ গুলোর মধ্যে বর্তমানে ইনক্রিয়েটেনস খাবারের পরে কতগুলো হরমোন বের হয় এগুলোর নাম ইনক্রুয়েটিন হরমন। এগুলো সতেজ বা সক্রিয় করতে সিটাগ্লীপটিন,ভিক্টোজা এগুলোর সঙ্গে সমন্বয় হয়ে মেটফরমিন ঔষধ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। 

মেটফরমিন ওষুধটি ডায়াবেটিসের জন্য খুবই উপকারী। আপনি চাইলে যদি আপনার সুগার লেভেল পয়েন্ট ১১ এর উপরে হয় তাহলে এই ওষুধটি আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এই ওষুধটি ডায়াবেটিস রোগের জন্য অনেক ভালো কাজ করে। এছাড়া আরো এক ধরনের ওষুধ আছে সুগারকে প্রসবের সঙ্গে বের করে দিতে সক্ষম হয় এগুলোর নাম এডন থেরাপি। 

এই থেরাপি ডায়াবেটিসের জন্য বিশেষ উপকারী। তারপর বর্তমানে যে ইনসুলিনের পরিবর্তন হয়ে নানা ধরনের ইনসুলিন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে যা ৪৮ ঘন্টা থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত ডায়াবেটিস রোগের কাজ করে।ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি ১৬ পয়েন্টের উপরে থাকে তাহলে এই ইনসুলিন ব্যবহার করা যেতে পারে।তবে চিকিৎসকের সহযোগিতা নিয়ে ব্যবহার করাই ভালো।

বর্তমানে বিশ্বে প্রায় 50 কোটি মানুষের উপরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এগুলোর মধ্যে টাইপ টু ডায়াবেটিস এর সংখ্যাই বেশি। বেশিরভাগই রোগীদেরই ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। নিয়মিত শরীর চর্চা না করা, ওষুধ নিয়মিত না খাওয়া, অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ ইত্যাদি সঠিকভাবে মেন্টেইন না করার কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না। 

বর্তমানে খাবার ট্যাবলেট ও বিভিন্ন প্রকার ইনজেকশন আবিষ্কার হয়েছে। যেমন-ইনসুলিন,জিএলপি১ রিসেপ্টর এগোনিস্ট ইত্যাদি ডায়াবেটিসের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।ডায়াবেটিস রোগীরা পূর্বে ইনসুলিন ব্যবহার করলেও বর্তমানে জিএলপি১ রিসেপ্টর এগোনিস্ট ইনজেকশন সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহ অন্যান্য রোগ হয় না বললেই চলে।

যেমন- কিডনি সমস্যা, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি কমে যায়। এই সমস্ত চিকিৎসা ছাড়া ডায়াবেটিসের পয়েন্ট যদি 16 এর উপরে হয় তাহলে ইনসুলিন ব্যবহার করা যেতে পারে। একেক জনের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য একেক ধরনের ঔষধ প্রয়োজন হয় ।আপনার সুগার লেভেল কত তার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসক আপনার জন্য ওষুধ প্রয়োগ করবেন বা চিকিৎসা দিবেন।

আরো পড়ুন: কোমর ব্যথা কি কিডনি রোগের লক্ষণ সবারই জানা দরকার

বিভিন্ন প্রকার ঔষধের সমন্বয়ে যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না আসে তাহলে চিকিৎসকের মতামত অনুসারে ইনসুলিন ব্যবহার করা উচিত।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কিছু ব্যায়াম:

ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে উপরের অংশে আলোচনা করেছি। আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হয়ে থাকেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওই ওষুধ বা চিকিৎসা নিতে পারেন ।এখন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের কিছু ব্যায়াম নিয়ে আলোচনা করবো ।শরীর যদি সচল রাখা হয় তাহলে আপনার রক্তে সুগারের পরিমাণও কন্ট্রোলে থাকতে পারে।


 যেমন-দ্রুত হাঁটা বা দৌড়ানো,বাইসাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা,সিঁড়ি দিয়ে উঠা নামা করা, ফুটবল খেলা ইত্যাদি ব্যায়াম করলে সুগারের পরিমাণ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। এছাড়া শরীরে ঘাম ঝরানোর কিছু মাঠের কাজ যেমন কোদাল দিয়ে মাটি কাটা, বিভিন্ন প্রকার জিম করা ইত্যাদি ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। 

চিকিৎসকদের মতে,কাডিয়োভাসকুলার নামক এই ব্যায়ামটি করলে চর্বি ঝরে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।তবে খালি পেটে কখনোই ব্যায়াম করবেন না। খালি পেটে ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর চেয়ে কিছু খেয়ে ব্যায়াম করা শুরু করবেন। 

ডায়াবেটিসের ধরন বা ডায়াবেটিসের মাত্রার উপর নির্ভর করে সপ্তাহে ১৭৫ মিনিট ব্যায়াম বা প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। নাচা বা ডান্স করা একপ্রকার ব্যায়াম। প্রতিদিন ৩০ মিনিট বাজনার তালে তালে ডান্স করলে মন ভালো থাকে শরীরের পক্ষেও কার্যকর।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখার উপায়: 

ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে অনেক মানুষ জানতে চাইলে আমি এই আর্টিকেলটি লিখতে বসেছি। তবে যে সমস্ত জিনিস খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে সেগুলো আমাদের জানার দরকার ।যেমন- করলা, জাম, আদা, আমলকি ইত্যাদি নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস পয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ থাকবে। 

ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় সফলভাবে জানা না গেলেও কিছু কাজের মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ৯০ মিনিট ব্যায়াম বা পরিশ্রম করলে ডায়াবেটিস ২৫ পার্সেন্ট এর বেশি রোধ করা সম্ভব।আরো কিছু উপায় অবলম্বন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। 

যেমন- খাদ্য অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ, রাত না জাগা বা সঠিক মত ঘুমানো, সময় মত খাবার খাওয়া,ভেজাল খাদ্য পরিহার করা, ওজন ঠিক রাখা, নেশা জাতীয় না খাওয়া, কোল্ড ড্রিংকস পরিহার করা,চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ইত্যাদি পালন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

কিছু খাবার ডায়াবেটিসের চিকিৎসার কাজ করে: 

ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি সে সম্পর্কে যদিও আলোচনা করেছি ।তবুও কিছু খাবার আছে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে তা হল-কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস পুরোপুরি ভালো হবে না।তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

যেমন- প্রতিদিন একই রকমের খাবার না খেয়ে বিভিন্ন রকমের খাবার খেতে হবে, লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি , সময় মত খাবার খেতে হবে, সকালের নাস্তা, দুপুরের, রাতের খাবার ঠিক সময় খেতে হবে।ফলমূল ,শাকসবজি, কম প্রোটিনযুক্ত খাবার 

যেমন- কুসুম ছাড়া ডিম, মাছ,শীম, টক দই, বাঙ্গি, জাম্বুরা ,খেজুর ইত্যাদি খেলে ডায়াবেটিসের সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে না। শাকসবজির- মধ্যে খিচুড়ির সাথে গাজর, মটরশুঁটি, বরবটি, শিম খাওয়া যেতে পারে। কম শর্করাযুক্ত শাকসবজি হিসেবে পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি খাওয়া যেতে পারে। 

আরো পড়ুন: ডায়াবেটিস কত পয়েন্ট হলে মানুষ মারা যায় সবারই জানা দরকার

এছাড়া টক জাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে। মুরগির মাংস, কবুতরের মাংস, কোয়েল পাখির মাংস খাওয়া যেতে পারে। খেলে উপকার হবে। প্রচুর পরিমাণ পানি পান করবেন।প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ গ্রাম কাঁচা পেঁয়াজ খান কারণ কাঁচা পেঁয়াজের হজমে ও ডায়াবেটিসের জন্য মূত্রবরধক ঔষধ হিসেবে কাজ করে।

উপসংহার- ডায়াবেটিসের আধুনিক চিকিৎসা কি কি: 

প্রিয় পাঠক ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ আসলে এটা পুরোপুরি ভালো করা সম্ভব নয়। এটা শুধু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আপনার যদি ডায়াবেটিসের মাত্রা ১৬ পয়েন্ট এর উপরে হয় তাহলে ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারেন। অথবা উল্লেখিত পোষ্টের মধ্যে যেসব ঔষধ বা ইঞ্জেকশন উল্লেখ করা আছে সেগুলো আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যবহার করতে পারেন।

তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার যে পদ্ধতিগুলো আলোচনা করেছি তা সবগুলোই আপনার উপকারে আসবে। তাই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং আপনার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন। যদি কোন পরামর্শ থাকে তাহলে কমেন্টস বক্সে শেয়ার করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url