কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় জানলে অবাক হবেন
প্রিয় পাঠক, আপনি কি জানেন কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয়? অনেকেই জানে না যে কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয়। তাই আজ আমি আলোচনা করব কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয়।
চলুন তাহলে দেরি না করে শুরু করা যাক কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় আলোচনা করি ।
কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয়:
কমলা ফল হচ্ছে পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি মিষ্টি জাতীয় ফল ।এটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও সুস্বাদু। এই ফলের চামড়া বা খোসা দিয়ে নানা ধরনের কাজ হয়। যেমন- মুখের ব্রণের কাজ করে, কেক বা বিস্কুট তৈরি করা যায়, দাঁতের হলুদ ভাব দূর করে, ত্বকের যত্নে ব্যবহার হয়,ডায়াবেটিস মোকাবেলা,
আরো পড়ুন: মুখের উজ্জ্বলতা কিভাবে বাড়ানো যায়-উজ্জ্বলতা বাড়ানোর উপায়
সুগন্ধি তৈরি,পেটের সমস্যা দূর করে, ওজন কমায়, অনিদ্রা দূর করে, ক্যান্সার ও হাড়ের রোগ প্রতিরোধ করে,কাশি লাঘব করে। এছাড়া কমলার মধ্যে নানা ধরনের ভিটামিন যেমন- ফাইবার, ভিটামিন সি,ফোলেট, ভিটামিন বি-৬,ও ক্যালসিয়ামের মত প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
এই ফলের খোসার মধ্যে আছে এন্টি মাইক্রোরিয়াল,অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান। একটু পানির সাথে কমলার খোসা সিদ্ধ করে সেই পানি মুখ ধোয়ার কাজে ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ ও নরম হয়।
কমলার খোসা পিত্ত ও কফের সমস্যায় কাজ করে:
কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় তা নিম্নে পয়েন্ট আকারে আলোচনা করব। আশা করছি আমার এই আর্টিকেলের সঙ্গেই থাকবেন।কফের সমস্যা ও পিত্তের যেকোনো সমস্যা দূর করতে এই ফলের খোসার রস দারুন কাজ করে। কমলার খোসা পাতলা করে ছিলে নিয়ে তারপর খোসা কুচি কুচি করে কেটে বা গুড়া করে কুচি গুলো রং চায়ের সাথে মিশিয়ে তার সাথে একটু আদা দিলে আরো ভালো হয় ।
এভাবে রং চা খেলে পিত্ত ও কফের সমস্যা সমাধান হয় ।সুতরাং আপনার যদি কফ ও পিত্তের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই ভাবে চা তৈরী করে আপনি খেতে পারেন।
কমলার খোসা ওজন কমাতে ও অনিদ্রা দূর করে:
কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় বা এই খোসার উপকারিতা কি কি তার মধ্যে এই খোসা ওজন কমাতে দূর করতে ও অনিদ্রা দূর করতে কাজ করে। এটি একটি অন্যতম উপকার কারণ এতে ট্রাইগ্লিসারাইড দ্রবীভূত থাকে। তাই উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরলের সমস্যা এবং ওজন কমানোর জন্য এই খোসা দারুন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কমলার খোসা মিশ্রিত পানি গোসলের সময় ব্যবহার করলে অনিদ্রা দূর হয়।
কমলার খোসা মুখের ব্রণ সারায়:
যদি কেউ প্রশ্ন করেন যে কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় তাহলে এর উত্তরে বলতে পারি এই ফলের খোসা দিয়ে নানা ধরনের কাজ হয়। তার মধ্যে মুখের ব্রণ সারাতে ভালো কাজ করে কমলার এই খোসা। একটি কমলার খোসা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে তারপর ঠান্ডা করে তার মুখে লাগালে দেখবেন আপনার মুখের ব্রণ কমে যাওয়া সহ মুখের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে। অবশ্য এইভাবে নিয়মিত কয়েকদিন লাগাতে হবে।
কমলার খোসা দাঁতের ময়লা দূর করে যেভাবে:
কমলার খোসার উপর সামান্য পানি ছিটিয়ে দিন। তারপর সেই খোসা দাঁতে ঘসলে দাঁতের হলুদ ভাব কেটে যাবে। এছাড়া কমলার খোসা বেটে বা আপনার টুথপেস্টের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এইভাবে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করলে দাঁত পরিষ্কার সহ দাঁতের নানা ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এবং দাঁত উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে। দাঁত সুন্দর ও ঝকঝকে রাখতে কমলার খোসা দারুন কাজ করে ।কমলার খোসায় থাকা ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম দাঁতের জীবাণু ধ্বংস করে এবং এটি দাঁতের ক্ষয় রোধ করতেও সাহায্য করে।
কমলার খোসা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও ঘরের গন্ধ দূর করে:
কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় তা হয়তো আপনি এতক্ষণে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। তাই পুরোপুরি জানতে আমার এই পোস্টের সঙ্গেই থাকুন। একটু পানির সাথে কমলার খোসা তার সাথে সামান্য দারুচিনি মিশিয়ে পানি ফুটিয়ে নিন। তারপর এই ফুটন্ত পানি ঠান্ডা করে বা হালকা গরম থাকা অবস্থায় ঘরে স্প্রে করলে ঘরের গন্ধ দূর হয়ে সুন্দর সুগন্ধ হবে।
এছাড়া এই খোসা শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন। তারপর মসুরের ডালের সঙ্গে বেটে মুখে লাগান।তারপর কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন । এভাবে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখের দাগ দূর হওয়া সহ মুখের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে ।
কেক ও বিস্কুট তৈরিতে কমলার খোসা:
কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয় সেগুলোর মধ্যে কেক বা বিস্কুট তৈরি তে ইহা দারুন ভাবে ব্যবহার হয় । একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে কমলার খোসা। বাড়িতে বা বাসায় বসে আপনি এই খোসা দিয়ে কেক বা বিস্কুট তৈরি করতে পারেন। কমলার খোসা কেটে মিহি করে বেটে নিয়ে
আরো পড়ুন: কাঁঠালের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি- কাঁঠাল খাওয়ার নিয়ম
ময়দার সঙ্গে মিশিয়ে কেক বা বিস্কুট তৈরি করতে পারবেন এবং এটি দিয়ে খাবারের সালাদ বানাতেও পারবেন তাতে ফ্লেভার হয় এবং খেতে সুস্বাদ লাগে।
চুলের যত্নে কমলার খোসা :
কমলা তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকায় আমাদের চুল বৃদ্ধিতে দারুন কাজ করে। কমলার খোসার গুড়া আপনার ব্যবহার কৃত চুলের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপর চুলে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।এভাবে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল হবে মজবুত, শক্ত ও লম্বা। এছাড়া এতে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে চুলের বিভিন্ন প্রকার ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
এতে রয়েছে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন সি চুলের খুশকি দূর করতে সহায়তা করে ।এই খোসার গুড়ার সঙ্গে একটু মধু মিশিয়ে নিন। তারপর শ্যাম্পু করা চুলে এই মিশ্রণটি লাগান। তারপর 10 থেকে 12 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন অনেক উপকার পাচ্ছেন এইভাবে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে।
কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক:
কমলার খোসা ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। কমলার খোসা দিয়ে ঘরে বসে ফেস প্যাক তৈরি করা যায়। কমলার খোসা বাটা চন্দন গুড়া, লেবুর রস ও কাঁচা দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট রাখুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে মুখ নরম হবে।
কমলার খোসার ক্ষতিকর দিক:
কমলার খোসার কি কি কাজ হয় এবং এর উপকার কি কি তা উপরের অংশে আলোচনা হয়েছে।আপনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন পুরো পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে যে কমলার খোসা কি কি কাজ করে।কমলার খোসার সাধারণত ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে। আসলে কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া বা অতিরিক্ত ব্যবহার করা আমাদের ঠিক নয়।
আরো পড়ুন: পেয়ারা ফলের মধ্যে কি ধরনের গুণাগুণ রয়েছে জানুন
অতিরিক্ত যে কোন জিনিস খেলে বা ব্যবহার করলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই অতিরিক্ত কমলার খোসা খেলে বা ব্যবহার করলে তা মুখের, ত্বকের ,শরীরের নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে।তাই নিয়ম অনুসারে অর্থাৎ উপরে আলোচিত কমলার খোসার কাজ সমূহ যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেই ভাবে আপনি কমলার খোসা খেতে পারেন অথবা ব্যবহার করতে পারেন।
উপসংহার- কমলার খোসা দিয়ে কি কি কাজ হয়:
প্রিয় পাঠক /পাঠিকা, আপনারা হয়তো আমার এই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে কমলার খোসার কি ধরনের কাজ হয় বা কমলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে। তাই পুরো পোস্টটি আপনি পড়বেন এবং অন্যদেরকেও পড়ার জন্য সহযোগিতা করবেন মন্তব্যসহ শেয়ার করার মাধ্যমে।
এবং অন্যদেরকেও জানিয়ে দিবেন কারণ নিজে উপকার পাওয়া সহ যেন অন্য ব্যক্তিরাও উপকৃত হতে পারেন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url